গ্রামবাসীর চাঁদায় সাঁকো জুড়ল আমতা-খানাকুলকে
রকারের মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে গ্রামবাসীরা নিজেরাই তিন লক্ষ টাকারও বেশি চাঁদা তুলে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপরে তৈরি করে ফেলেছেন সাঁকো। সেই সাঁকোর দৌলতে হাওড়ার আমতার সঙ্গে সংযোগ ঘটেছে হুগলির খানাকুলের মাড়োখানার। দীর্ঘদিন ধরে দুই জেলার মধ্যে যাতায়াতের সমস্যায় ভোগা গ্রামবাসীরা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
গত রবিবার সাঁকো উদ্বোধন হল। উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা পরিষদ সদস্য বিশ্বজিত্‌ মণ্ডল, হাওড়ার আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিঠু বারুই, মাড়োখানা পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ বেরা প্রমুখ। আমতা-২ ব্লকের উত্তর ভাটোরা এবং হুগলির খানাকুল-২ ব্লকের মাড়োখানা এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতকে ভাগ করেছে মুণ্ডেশ্বরী নদী। নদীটির জন্য মাড়োখানার বাসিন্দাদের অনেকটা পথ ঘুরে খানাকুলের মায়াপুর এবং হাওড়ার ডিহিভুরসুট হয়ে সড়কপথে কলকাতায় যেতে হয়। এতে সময় লাগে প্রায় ছ’ঘণ্টা। অথচ, মুণ্ডেশ্বরী পার হয়ে ভাটোরার উপর দিয়ে বাগনান হয়ে তাঁরা যদি কলকাতায় যান, তা হলে অন্তত দু’ঘণ্টা সময় কম লাগে। মুণ্ডেশ্বরী পার হওয়ার জন্য ফেরি নৌকা চালু থাকলেও সেটা এতটাই অনিয়মিত, যে তার উপরে ভরসা করে এত দিন দু’টি গ্রামের বাসিন্দারাই বিপাকে পড়তেন।
এই সাঁকোই জুড়ল দুই জেলার দুই প্রান্তকে।—নিজস্ব চিত্র।
স্থায়ী সেতুর জন্য বাম আমলে দুই জেলার জেলা পরিষদেই বার বার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। সেই কারণে দুই গ্রামের মানুষ বেশ কিছু দিন আগে এক সঙ্গে বসে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরির পরিকল্পনা করেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এই কাজে তাঁদের উত্‌সাহিত করেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে আনা হয় সাঁকো তৈরির কাজে পারদর্শী মিস্ত্রিদের। প্রায় ১৫ জন মিস্ত্রির ১০ দিন ধরে দিনরাতের চেষ্টায় তৈরি হয় এই সাঁকো।
গ্রামবাসীরা জানান, ৪৭৫ ফুট লম্বা এবং ৯ ফুট চওড়া বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে তিন লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা। বাঁশ লেগেছে প্রায় দু’হাজার। তবে, সাঁকো হলেও সাইকেল, মোটরবাইক তো বটেই, ছোট গাড়িও চলাচল করতে পারবে বলে গ্রামবাসীর দাবি। সাঁকোটি তৈরি হওয়ার ফলে আমতার উত্তর ভাটোরা, দক্ষিণ ভাটোরা, কাশমুলি, কুলিয়া, খানাকুলের মাড়োখানার সুন্দরপুর, আনোয়ারা, ধলডাঙা-সহ দুই পারেরই বহু মানুষ উপকৃত হবেন বলে জানান গ্রামবাসীরা।
মাড়োখানার বাসিন্দা সুজিত পাল বলেন, “দীর্ঘদিনের কষ্ট অবশেষে লাঘব হল। সব গ্রামবাসী এগিয়ে আসাতেই সাঁকো তৈরি করা গেল।” প্রায় একই সুরে উত্তর ভাটোরার শ্রীদাম গায়েন বলেন, “বহু বছর আগে দুই জেলার জেলা পরিষদকেই সাঁকোর জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু হয়নি। ফের আবেদন-নিবেদনে অনেক সময় যাবে। তাই আমরা সকলে মিলে চাঁদা তুলে কাজটা করে ফেললাম।” ভাটোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য, স্থানীয় তৃণমূল নেতা অশোক গায়েন বলেন, “দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ স্বেচ্ছায় চাঁদা দিয়েছেন। বামফ্রন্টের আমলে আমরা দুই জেলার জেলা পরিষদের কাছেই সেতু নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কাজ না হওয়ায় একান্ত নিরুপায় হয়ে আমরা সাঁকো নির্মাণের পরিকল্পনা করি।” তিনি আরও বলেন, “এটা স্থায়ী সমাধান নয়। পাকা সেতুর দাবি নিয়ে আমরা ফের দু’টি জেলা পরিষদের কাছেই আবেদন জানাব।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.