নোনাডাঙা নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ও পুর দফতরের মধ্যে টানাপোড়েন মিটল।
জমি হস্তান্তর বাবদ প্রাপ্য টাকা মকুব করল পুর দফতর। তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে সেই সিদ্ধান্তের কথা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে তারা। ফলে এই পার্কে আটকে থাকা ৫০০ কোটি টাকার লগ্নি ও অন্তত ১২ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পথ সুগম হল।
বিশেষ আর্থিক অঞ্চল নয়। ছোট ছোট জমিতে তথ্যপ্রযুক্তি হাব গড়তে লগ্নিকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ খাস কলকাতাতেই এ রকম একটি প্রকল্প ঝুলে ছিল দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সমস্যার কথা পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর কানে। এ বছর মার্চে দু’দফতরের কাজিয়া দ্রুত মেটানোর নির্দেশ দেন তিনি।
নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে ২০১০ সালে জমি পায় এইচএসবিসি, রোল্টা ও এইচসিএল। রাজ্য সরকারের নির্ধারিত দামেই জমি লিজ নেয় তারা। জমি পায় একর প্রতি ১ কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা দরে। ২০০৮-’০৯ সালের মন্দা কাটিয়ে সে সময়ে ছন্দে ফিরছিল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। স্থগিত হওয়া সম্প্রসারণ পরিকল্পনা ফের বাস্তবায়িত করতে চাইছিল ওই তিন সংস্থাই। রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জমি পাওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্প চালু করার কথা। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেও নিকাশি, জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ সংযোগের মতো পরিকাঠামো তৈরি করে দেয়নি রাজ্য। ফলে প্রকল্পের কাজ এগোনো যায়নি বলে অভিযোগ সংস্থাগুলির।
পুর দফতরের অধীন কেএমডিএ-র কাছ থেকে এই জমি নিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। হস্তান্তরের পরে ওই ৩ সংস্থাকে তা লিজ দেয় দফতরই। আর সমস্যার সূত্রপাত এখানেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, দু’দফতরের মধ্যে চুক্তি মাফিক বেসরকারি সংস্থাকে জমি দেওয়ার সময়ে ‘ট্রান্সফার ফি’ বাবদ কেএমডিএ-কে কিছু টাকা দেওয়ার কথা। তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সে সময়ে ওই টাকা দেয়নি। তা নিয়ে তখন তেমন মাথা ঘামায়নি পুর দফতরও।
কিন্তু পরে সমস্যা মাথা চাড়া দেয়। পূর্ব প্রতিশ্রুতি মতো পরিকাঠামো গড়ার দায়িত্ব কেএমডিএ-র। তারা সে কথা অস্বীকারও করেনি। কিন্তু ট্রান্সফার ফি-র টাকা না-পেলে কাজে হাত দিতে চায়নি তারা। অন্য দিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যে-পরিমাণ বকেয়া কেএমডিএ দাবি করে, তা তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের পক্ষে দেওয়া মুশকিল ছিল। দর কষাকষির পরে এই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এই টাকাই ছাড় দিল পুর দফতর। এ বার অপেক্ষা পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরুর। |