আলোয় সেজেছে রামপুরহাট শহর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
অন্যান্য দিনের রামপুরহাট শহর এবং সোমবারের শহর। দু’য়ের মধ্যে ব্যবধান চোখে পড়ার মতো। শুধু এ দিনটি নয়, আগামী চার দিন ধরে নানা অনুষ্ঠান ও আলোয় ঝলমল করবে এই শহর। উপলক্ষ বাবলাকালী ও দক্ষিণাকালী পুজো।
এই দুই কালী পুজোকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে রামপুরহাটে। জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বাবলাকালী মাতার বার্ষিক উৎসবে মানুষের ভিড় সামাল দিতে তৈরি পুলিশ-প্রশাসনও। অগ্রহায়ণ মাসের অমাবস্যায় বাবলাকালী মাতার বার্ষিক উৎসব হয়। সেই উৎসবে বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন তো বটেই, লাগোয়া মুর্শিদাবাদ জেলা, সীমান্ত রাজ্য ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজনও এখানে আসেন। প্রচলিত আছে, দীর্ঘদিন আগে হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুবলচন্দ্র দাস স্বপ্নাদেশ পেয়ে হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় প্রাচীন একটি বাবলা গাছের তলায় কালী মূর্তির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই কালীমাতা এলাকায় ‘বাবলাকালী’ নামে পরিচিত। আগে হ্যাচাকের আলোয় পুজো হতো। এখন বৈদ্যুতিক আলো। মহিলা ও পুরুষ পূণ্যার্থীদের জন্য আলাদা করে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। |
রামপুরহাট কামারপট্টি মোড়ে কালী পুজোর আলোকসজ্জা
সোমবার সন্ধ্যায় ছবিটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।
|
বাবলাকালী ছাড়াও রামপুরহাট লোটাস মোড় এলাকা, কামারপট্টি মোড় এলাকা, শ্রীফলা মোড়, নিশ্চিন্তিপুর এলাকায় অগ্রহায়ণ মাসের অমাবস্যায় দক্ষিণাকালী পুজো ঘিরে রামপুরহাট শহরে চার দিন ধরে চলবে নানা উৎসব-অনুষ্ঠান। লোটাস প্রেস গলিতে উত্তরায়ন ক্লাবের উদ্যোগে দক্ষিণাকালী মাতার পুজো হয়। কয়েক বছর ধরে এখানে চন্দননগরের আলোকসজ্জা বেশ সাড়া ফেলেছে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আলোকসজ্জায় উঠে এসেছে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি, সামুদ্রিক জীবজন্তু। এসবের পাশাপাশি রয়েছে সুউচ্চ নানান গেট। যা এলাকাকে রঙিন করে তুলেছে।
লোটাস প্রেসের গলি ছাড়িয়ে কামারপট্টি মোড়ে পৌঁছলেই নজরে পড়বে আলোর ঝর্না ধারা। এখানে যুবকবৃন্দের পরিচালনায় পুজো হচ্ছে। কামারপট্টি মোড় থেকে মহাজনপট্টি মোড় যাওয়ার জন্য রাস্তা, উল্টো দিকে দেশবন্ধু রোডে সুউচ্চ আলোর গেটে কোথাও স্থান পেয়েছে শিবের নটরাজ মূর্তি, কোথাও বা রামায়ণের দৃশ্য উঠে এসেছে। এ ছাড়া রাস্তার দু’ধারে আলোকমালায় কোথাও পার্কের দোলনায় শিশু দোল খাচ্ছে, কোথাও বা পাখি আহারের সন্ধানে উড়ছে। উদ্যোক্তারা জানালেন, সচিন তেন্ডুলকরের ক্রিকেট জীবনকে স্মরণে রেখে এলাকার বিশিষ্ট ক্রিকেট খেলোয়াড়, প্রতিবন্ধী সাঁতারু অর্চনা হেমব্রম ও তাঁর প্রশিক্ষক বদরুদোজ্জাকে যেমন সংবর্ধনা দেওয়া হবে, তেমনি মান্না দে স্মরণে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে হবে ‘স্মরণে-বরণে মান্না দে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।
এক কথায় বাবলাকালী ও দক্ষিণাকালী পুজো ঘিরে চার দিন যেন আলোয় গা ভাসিয়েছে রামপুরহাট শহর। |