দূর থেকে আসা পড়ুয়াদের জন্য নেই হোস্টেল ব্যবস্থা। গতানুগতিক পড়াশোনার বাইরে শেখানো হয় না হাতের কাজ। মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামের নেতাজি মূক, বধির বিদ্যাপীঠের এরকমই অবস্থা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সঠিক পরিকাঠামো না থাকায় কমছে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৬ সালে এই স্কুল গড়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন জেলা পরিষদের তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য মানবেন্দ্র ব্রহ্মচারী। সাহায্য করে স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি। স্থানীয় বাসিন্দা ধ্রুবচরণ রেজ স্কুলের জন্য জমিও দান করেন। ২০১০ সালে স্কুলটিতে মেলে সরকারি সহায়তা। এর পর জনশিক্ষা দফতর, সাংসদ এবং বিধায়ক তহবিলের টাকায় স্কুলের ত্রিতল ভবন, শৌচাগার-সহ বেশ কিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ৫০-এ ঠেকেছে। এদের মধ্যে ২৯ জন সংখ্যালঘু পরিবারের। এদের পড়ানোর জন্য রয়েছেন ৬ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক। অশিক্ষক কর্মী রয়েছেন ৫ জন। শুধু মন্তেশ্বর নয়, এই স্কুলে পূর্বস্থলী ১ ব্লক থেকেও পড়তে আসে পড়ুয়ারা। |
স্কুলের তরফে জানা গিয়েছে, স্কুল খোলার পর থেকে এখনও শিক্ষক ও কর্মীদের জন্য চালু হয়নি বেতন ব্যবস্থা। ফলে স্কুলে আসার আগ্রহ কমছে তাঁদের। ২০১১ সালে তৎকালীন মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচী স্কুল পরিদর্শন করেন। শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের বেতনের ব্যাপারে উদ্যোগী হন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত সমস্যা রয়েছে তিমিরেই। এ ছাড়া, মাস ছ’য়েক আগে পর্যন্ত পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হত তিনটি মোটর ভ্যানে। কিন্তু অর্থের অভাবে সেই সংখ্যা কমে একটিতে দাঁড়িয়েছে। ফলে বহু অভিভাবকই ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহ হারাচ্ছেন, এমনটাই জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। দূর থেকে আসা পড়ুয়াদের জন্য নেই হোস্টেল ব্যবস্থা। গতানুগতিক পড়াশোনার বাইরে পড়ুয়ারা কোনও কারিগরী শিক্ষা পায় না। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলের মূক ও বধির ছাত্রছাত্রীরা শিখতে পারেনা হাতের কাজ। প্রতি বছর পড়ুয়ারা মাথা পিছু ৪০০ টাকা সরকারি অনুদান পায়। তাতেই কোনও রকমে চলে স্কুল।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক খবীর মণ্ডলের কথায়, “একে তো আর্থিক পরিকাঠামোর উন্নতি হচ্ছে না। তার উপর বছরের পর বছর বেতন না হতাশা তৈরি হয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে। ফলে বর্তমানে তাঁদের পক্ষে সমান ভাবে স্কুল চালানো সম্ভব হচ্ছে না।” তিনি দাবি করেন, ২০১০ সালে স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ছিল ৯৮। পদাধিকার বলে এই স্কুলের সভাপতি কালনার মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠি। তিনি বলেন, “স্কুলটিতে এমন সমস্যা রয়েছে আমার জানা ছিল না। প্রধান শিক্ষক সমস্যার কথা বিস্তারিত ভাবে জানালে তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।” |