আলিপুর নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে আমিনুল ইসলামের পরিবার। শনিবার আলিপুর আদালত উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাব এবং সাক্ষীদের বয়ানের অসঙ্গতির কারণে অভিযুক্ত শাহাজাদা বক্সকে বেকসুর খালাস করে দেয়। রবিবার আমিনুলের বাবা ইজহারুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত শাহাজাদা বক্স শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাবেন। এর আগেই অবশ্য আমিনুল কাণ্ডের তদন্ত সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আমিনুলের পরিবার হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছেন। সেই মামলার শুনানি চলছে।
শনিবার আলিপুর আদালত শাহজাদা বক্সকে বেকসুর খালাস করার পর থেকেই আতঙ্কে আছেন অভিযোগকারিণী নাবালিকা এবং আমিনুলের পরিবার। রবিবার দুপুরে বাড়িতে বসে আমিনুলের মা শাহনাওয়াজ ইজহারও জানান, তবে ছেলের মৃত্যুর বিচারের জন্য তাঁরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। আবেদন করবেন হাইকোর্টে।
প্রায় এক বছর হতে চলল আমিনুল মারা গিয়েছেন। ন্যায় বিচারের আশায় আইনি লড়াই চালাচ্ছেন আমিনুলের পরিবার। যে মেয়েটির জন্য আমিনুল লড়াই শুরু করেছিলেন, সেও যাতে সঠিক বিচার পায়, সেই আবেদনও রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু শনিবার আদালতের রায়ের পর কিছুটা ধাক্কা খেলেও, ফের ঘুরে দাঁড়াতে চান আমিনুলের পরিবার। শাহাজাদা বক্স ছাড়া পাওয়ার খবর শুনে সেই কিশোরীর চোখে মুখেও আতঙ্কের ছাপ। রবিবার আমিনুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ঘরের একটি সোফায় জড়োসড়ো হয়ে বসে সেই মেয়েটি। এলাকায় শাহাজাদা ফেরত আসার পরে তাঁরা মা-মেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানালেন। তিনি বলেন, ‘‘রাত থেকেই হুমকি আসছে।’’
শাহাজাদার আর এক সঙ্গী, যার বিরুদ্ধে ওই কিশোরীর অভিযোগ ছিল, সেই সেলিমও শাহাজাদা গ্রেফতারের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিল। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাহাজাদা মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেও এলাকায় ফিরে এসেছে। রবিবার তিলজলা লেনে গিয়ে দেখা গেল শাহাজাদার বন্ধুরা উৎসবের মেজাজে রয়েছেন। শাহাজাদার পড়শিরা জানান, ছাড়া পেয়েই সঙ্গীদের বিরিয়ানি খাইয়েছেন তিনি।
কী বলছেন জেল থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া শাহাজাদা? তাঁর দাবি, তিনি যে নির্দোষ তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে ফাঁসানোর জন্যই আমিনুল এবং তার কিছু সঙ্গী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। শাহাজাদা বলেন, “আমি প্রোমোটিংয়ের কাজ করি। নিয়ম মেনেই ব্যবসা করি। ব্যবসায় আমার উন্নতি দেখে আমিনুল তোলা চেয়েছিল। দিইনি বলেই আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।”
এত দিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকা সেলিমও এ দিন বলেন, “আমি নির্দোষ। শাহাজাদা গ্রেফতার হওয়ার পরে আমিনুলের বন্ধুদের অত্যাচারের ভয়েই আমি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। শনিবার শাহাজাদা ছাড়া পেয়ে আমাকে ফোন করতেই ফিরে এসেছি।” তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা হুমকির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দু’জনেই জানিয়েছেন। |