শেষ মুহূর্তে অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে গেল কলকাতায় রান্নার গ্যাস ডিলারদের কাছে গ্রাহকদের আধারের জন্য ছবি তোলা এবং তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া।
আজ, সোমবার থেকে কলকাতা পুলিশ এলাকায় এ জন্য শিবির চালুর কথা ছিল। কিন্তু সরকারি সূত্রে খবর, প্রস্তুতি পর্ব এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। শহরে কত জন গ্যাস গ্রাহকের ইতিমধ্যেই আধার কার্ডের জন্য ছবি তোলা ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই ছবিটা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
গত মাসের শুরুতে কলকাতা পুরসভা, গ্যাস ডিলার, তেল সংস্থা এবং জাতীয় জনগণনা দফতরের বৈঠকের পর ২১ নভেম্বর থেকেই শুধুমাত্র রান্নার গ্যাস গ্রাহকদের জন্য দোকানে এই ব্যবস্থা চালুর কথা জানিয়েছিলেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। তার পর তা পিছিয়ে হয় ২ ডিসেম্বর। কথা ছিল, কত জন গ্রাহকের আধার কার্ড তৈরি বাকি রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে পুরসভা এবং জনগণনা দফতর।
এ দিকে অল ইন্ডিয়া এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা বিজন বিশ্বাস জানান, কলকাতায় শিবির কবে চালু হবে বা আদৌ হবে কি না, এ নিয়ে কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। তিনি বলেন, “এই বিভ্রান্তির জেরে অনেক গ্রাহকই দোকানে এসে প্রশ্ন করলেও আমরা কিছুই জানাতে পারছি না।” এরই মধ্যে সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক এবং জাতীয় জনগণনা দফতরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত কলকাতায় ডিলারদের কাছে শিবির চালু হচ্ছে না। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তা প্রথম চালু হবে কোচবিহারে। কারণ সেখানে সামগ্রিক ভাবে আধারের জন্য নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তোলার কাজ অন্যান্য জেলার থেকে অনেকটা এগিয়ে। সেখানকার ফলাফল দেখেই পরে কলকাতা বা হাওড়ায় একই ব্যবস্থা চালুর কথা ভেবেছে তারা। তবে কোনও ক্ষেত্রেই গ্রাহকদের পরিবারের অন্য সদস্যরা ওই শিবিরে গিয়ে ছবি তোলা
বা বায়োমেট্রিক তথ্য জানাতে পারবেন না।
দেশে ১৫০টিরও বেশি জেলায় পর্যায়ক্রমে আধারের ভিত্তিতে ভর্তুকির গ্যাস বণ্টন ব্যবস্থা শুরু করেছে কেন্দ্র। গত ১ নভেম্বর থেকে কলকাতা (পুলিশ কমিশনারেট এলাকা), হাওড়া এবং কোচবিহারেও তা চালু হয়েছে। ১ ডিসেম্বর, রবিবার থেকে তা চালু হয়েছে হুগলিতেও। তেল সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ভর্তুকির গ্যাস (যদি না একটি অর্থবর্ষে ন’টির কোটা শেষ হয়ে যায়) পেতে হলে সর্বত্রই যে-জেলায় যে দিন এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তার পর থেকে তিন মাসের মধ্যে সেখানকার গ্রাহকদের তাঁদের ব্যাঙ্কের কাছে আধার নম্বর, তেল সংস্থার নাম জানাতে হবে। না-হলে তিন মাস পর থেকে তাঁদের বাজার দরেই গ্যাস কিনতে হবে। কোথাওই এখনও এই সময়সীমার কোনও পরিবর্তন হয়নি।
এই ডামাডোলের মধ্যেই আগামী ১০ ডিসেম্বর ফের রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিতে আধার নম্বর ব্যবহার করা নিয়ে মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। রান্নার গ্যাসের ক্ষেত্রে আধার বাধ্যতামূলক হতে পারে না বলে আগে এক রায়ে জানায় শীর্ষ আদালত।
সরকারি সূত্রে খবর, আগামী শুনানিতে বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারবে রাজ্যগুলিও। কিন্তু রাজ্যের আপত্তি থাকলেও, কেন্দ্রের এখনও পিছু হটার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যার প্রমাণ, রবিবার থেকে হুগলিতেও ভর্তুকিতে রান্নার গ্যাস পেতে চালু হয়েছে আধার নম্বর ব্যবহার। |