বাজারদর অনুযায়ী জমির ন্যায্য দাম দেওয়ার দাবিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিদের একাংশ। শনিবার উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার মারনাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কোয়ারপুর এলাকার প্রায় ৫০ জন চাষি ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত অবরোধ করেন। পরে, পুলিশ ও ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীদের তরফে মফিজুদ্দিন আহমেদ বলেন, “জমির অবস্থান ও উর্বরতা বিচার করে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি কাঠা জমির দাম এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ চাষিদের কাঠা প্রতি ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বেশি দিতে চাইছেন না। বাজারদর অনুযায়ী জমির দাম না পেলে চাষিরা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জমি না দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লা জানান, তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রায় তিন বছর ধরে ইটাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কটিকে চার লেনের রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে কোয়ারপুর এলাকায় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। ওই এলাকার প্রায় ১০০ জন চাষির দেড়শো কাঠা জমি অধিগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই জমি জরিপের কাজ শেষ করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে অধিগ্রহণের কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনও চাষি জমির দাম পাননি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় দু’বছর আগে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে চাষিদের নিয়ে একাধিক শুনানি সভার আয়োজন করা হয়। কালু মহম্মদ ও তফিজুদ্দিন আহমেদের মতো চাষিদের অভিযোগ, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শুনানিসভায় জমির দাম নিয়ে আলোচনা না করলেও বাজারদর অনুযায়ী দাম দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই শর্তেই তখন জমি দিতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে বাজারদর থেকে চাষিদের অনেক কম দাম দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” ইটাহারের বিধায়ক অমলবাবু বলেন, “চাষিরা যাতে জমির ন্যায্য দাম পান সে জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। তবে চাষিদেরও মনে রাখা দরকার উন্নয়নের স্বার্থে চার লেনের রাস্তা তৈরি হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।”
এ দিন ঘণ্টা দু’য়েকের পথ অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসের যাত্রীরা সেই যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়ে দুর্ভোগে পড়েন।
|