বিয়ে বাড়ির সামনে জিপ থামতে সবাই ভেবেছিলেন বর এল বুঝি। কিন্তু দেখা গেল বর না, গাড়ি থেকে নেমেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসিরহাটের চাঁপাপুকুর গ্রামে বিয়ের দিনই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ে থামাল পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁপাপুকুর গ্রামের বছর ষোলোর এক কিশোরীর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ঘোড়ারাস গ্রামের বছর কুড়ির এক তরুণের। দুই পরিবার থেকে দেখেশুনেই বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। পুলিশ জানায়, এ দিন কেউ বসিরহাটের চাইল্ড লাইনে ফোন করে বিষয়টি জানান। চাইল্ড লাইন বিষয়টি মহকুমাশাসককে জানায়। তার পরে তিনিই বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেন পুলিশকে।
তখন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা। অধিকাংশ নিমন্ত্রিতই পৌঁছে গিয়েছেন চাঁপাপুকুরের বিয়েবাড়িতে। পৌঁছে গিয়েছেন পুরোহিতও। বরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সকলে। মোবাইলে জানাও হয়ে গিয়েছে, বরযাত্রীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে হবু জামাই।
তাই জিপ থেকে বরের বদলে পুলিশকে নামতে দেখে হতবাক হয়ে যান সকলেই। তবে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে বললে খানিকটা অস্বস্তির পরে মেনে নিয়েছেন সবাই। ততক্ষণে বিয়ে করতে বেরিয়ে পড়েছে নাবালক বরও। সঙ্গে রয়েছে বরের বাবা ও বরযাত্রীরা। মোবাইলে খবর পৌঁছে যায় তাঁদের কাছেও। তৎক্ষণাৎ বর ও বরযাত্রীদের ফেরত পাঠিয়ে বরের বাবা ছোটেন থানায়। মেয়ের বাবাকেও থানাতেই নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এমন কাজ করবেন না, এই ব্যপারে পুলিশের কাছে লিখিত মুচলেকা দিয়ে তবেই ছাড়া মেলে পাত্র-পাত্রীর বাড়ির লোক জনের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে কনের বাড়ির লোক জনের একটু দ্বিধা ছিল। কিন্তু পরে মেনে নেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার শক্তিপদ দাস বলেন, “নাবালিকার বিয়ে আইনত অপরাধ জানতে পেরে দু’জনের অভিভাবকই নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। ছেলেমেয়ে সাবালক হলে তবেই তাদের বিয়ে দেওয়া হবে এই মর্মে মুচলেকা দেন তাঁরা। এরপরই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।” নাবালিকার বাবার বক্তব্য, অনেক কষ্ট করে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলেন তিনি। নাবালিকার বিয়ে দেওয়া অপরাধ, আগে জানলে এত ক্ষতি হত না। তবে এখন বিয়ে বন্ধ হলেও সাবালক হলেই ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেবেন বলে পুলিশের সামনে কথা দিয়েছেন দুই পক্ষই। আর তাতেই খুশি হবু বর-কনে। |