আইপিএল সেভেন শুরু হতে বাকি এখনও মাস পাঁচেক। কিন্তু ইতিমধ্যেই তার ঢাকে কাঠি পড়ে গেল।
সিঙ্গাপুরে দু’দিনের আইপিএল ওয়ার্কশপে (২৮ ও ২৯ নভেম্বর) উঠে এল কিছু প্রস্তাব যার মধ্যে এমন কিছু নতুনত্ব রইল, যা কি না অতীতের আইপিএল সংস্করণে দেখা যায়নি।
সেগুলো কী কী?
জানা গেল, আইপিএল সেভেন থেকে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি ন’জনের বেশি বিদেশি ক্রিকেটার সই করাতে পারবে না। রেজিস্ট্রেশন করানো যাবে সর্বোচ্চ সাতাশ ক্রিকেটারকে। প্রস্তাবে অন্তত সেটাই বলা হয়েছে। আইপিএল সিক্স পর্যন্ত সর্বোচ্চ এগারো জন বিদেশি সই করানো যেত, খেলানো যেত চার জনকে। কিন্তু এ বার নিয়ম পাল্টাচ্ছে। ঠিক যেমন বদলে যাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ‘প্লেয়ার রিটেনশন’-এর নিয়মও। যা খবর, তাতে এ বার থেকে চার নয়, সর্বোচ্চ পাঁচ জন ক্রিকেটারকে ধরে রাখতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে তাঁদের ধরে রাখার জন্য নির্দিষ্ট মূল্যও দিতে হবে। বৈঠকে আলোচনার পর যা ইঙ্গিত, প্রথম বিদেশিকে ধরে রাখতে হবে বারো কোটি টাকার কিছু বেশি দিয়ে। দ্বিতীয় প্লেয়ারকে ধরে রাখতে গেলে খরচ পড়বে ন’কোটির কিছু বেশি। তৃতীয় প্লেয়ারকে রাখতে গেলে খরচ সাড়ে সাত কোটির আশেপাশে। |
আইপিএল সাতে হাফ ডজন প্রস্তাব |
• চারের বদলে পাঁচ ক্রিকেটার ধরে রাখা।
• এগারো জনের বদলে সর্বোচ্চ ন’জন বিদেশির রেজিস্ট্রেশন।
• ‘স্যালারি ক্যাপ’ ষাট কোটি টাকা।
• ক্রিকেটারদের প্রাপ্য মেটানো হবে ডলারে নয়, টাকায়।
• ক্যাপড, আনক্যাপড সব প্লেয়ারই নিলামে।
• আসতে পারে জোকার কার্ড। |
|
আইপিএল সেভেন থেকে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ষাট কোটি টাকা খরচ করতে পারবে ক্রিকেটার কিনতে। ওই অঙ্কই ‘স্যালারি ক্যাপ’ হিসেবে ধার্য হয়েছে। এবং সিঙ্গাপুরের বৈঠকে উপস্থিত আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কোনও কোনও সদস্যের মনে হচ্ছে, কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি যদি পাঁচ জন প্লেয়ারকেই ধরে রাখতে যায়, তা হলে বাকি টিম তৈরির জন্য তার হাতে পড়ে থাকবে মাত্র চব্বিশ কোটির মতো। তাই এই ‘প্লেয়ার রিটেনশন’-এর নতুন নিয়ম ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কতটা সুবিধে দেবে, তা নিয়ে এখনও সে ভাবে কেউ নিশ্চিত নন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের এক কর্তা যেমন রাতে বলছিলেন, “যতক্ষণ না ব্যাপারটা চূড়ান্ত হচ্ছে, ততক্ষণ কিছু সুবিধে হবে কি না, তা নিয়ে মন্তব্য করা মুশকিল।”
যা শোনা যাচ্ছে, তাতে ২০১৪-র ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি আইপিএল নিলাম। বৈঠকে সেটাই আপাতত ঠিক হয়েছে। ‘ক্যাপড’ ও ‘আনক্যাপড’ সমস্ত ক্রিকেটারদেরই এ বার নিলামে তোলা হচ্ছে। ক্রিকেটারদের প্রাপ্য মেটানো হবে এ বছর থেকে টাকায়। ডলারে নয়। বৈঠকে উপস্থিত আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য তথা সিএবি যুগ্ম সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় রাতে বলছিলেন, “ডলারের অনুপাতে টাকার দাম বারবার বদলাচ্ছে। যদি ডলারেই ক্রিকেটারদের পেমেন্ট করা হত, তা হলে ভারতীয় ক্রিকেটাররা বঞ্চিত হত। তাই এ বার ভারতীয় মুদ্রাতেই সব হচ্ছে।” কোনও ক্রিকেটারের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি থাকলেও তাকে নির্ধারিত সময়ের আগে দরকারে ছেড়ে দিতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। যা পরিস্থিতি, এপ্রিল থেকে ভারতেই আইপিএল করার চেষ্টা হচ্ছে। আগামী বছর দেশে সাধারণ নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই। নির্বাচনের দিনের সঙ্গে আইপিএলের সূচি মিলে গেলে, কিছু ম্যাচ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে এশিয়ার কোনও দেশে।
সব ঠিকঠাক চললে, আইপিএলের সপ্তম সংস্করণে আসতে পারে ‘জোকার কার্ড।’ সেটা কী? আপাতত যা শোনা যাচ্ছে, প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে এ রকম কয়েকটা কার্ড দেওয়া থাকবে যা একমাত্র ব্যবহার করা যাবে নিজের ফ্র্যাঞ্চাইজির প্লেয়ার নিলামে ওঠার সময়। ধরা যাক, ‘রিটেনশনের’ বাইরে এক ফ্র্যাঞ্চাইজির কোনও ক্রিকেটার নিলামে উঠল। অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে দরাদরি হয়ে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার সর্বোচ্চ দর পেয়েও গেল। তখন যদি তার পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি মনে করে, তা হলে নিলামে ওঠা দরেই সে তার পুরনো ক্রিকেটারকে কিনে নিতে পারবে।
‘জোকার’ কার্ড বের করে! |