গুজরাতের উন্নয়নের মডেল সামনে রেখে নরেন্দ্র দামোদর মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য বাংলার মানুষের সমর্থন চায় বিজেপি। মোদীর আগে কলকাতায় এসে শনিবার সেই বার্তাই দিয়ে গেলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক অমিত শাহ। তাঁর কথায়, “মোদী বাবা মানেই উন্নয়ন।” সেই উন্নয়নে শুধু গুজরাত নয়, সারা দেশ জুড়ে করতেই মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসানো দরকার বলে মনে করেন অমিত।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন আগামী ৩০ জানুয়ারি ব্রিগেড প্য্যারেড গ্রাউন্ডে তাঁরা সভা করবেন। বস্তুত, তৃণমূলের সমাবেশকে টক্কর দিতেই ফেব্রয়ারির প্রথম সপ্তাহে ব্রিগেডে সমাবেশ করতে চান রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সভার প্রধান বক্তা মোদী। এ দিন রানি রাসমণি রোডে বিজেপি-র ‘জনজাগরণ সভা’য় অমিত ঘোষণা করেন, মোদী বাংলায় আসবেন এবং কলকাতায় সভা করবেন। তার আগে উন্নয়নকে হাতিয়ার করে মোদীর সমর্থনে দলীয় নেতা-কর্মীদের রাজ্য জুড়ে প্রচারে নামতে বলেন তিনি। বস্তুত ব্রিগেডেরই প্রস্তুতিতেই এ দিন বিজেপি-র সভা ছিল।
বাংলায় তাঁর আড়াই বছরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়নের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সেই সাফল্যের খতিয়ানকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানান বিজেপি নেতৃত্ব। গুজরাতের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে গুজরাত কতটা এগিয়েছে তা বিস্তারিত ভাবে বলেন। তিনি সভায় উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছোঁড়েন, “এ রাজ্যে এমন কোনও গ্রাম আছে যেখানে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে! গুজরাতে আছে।’’
সিপিএম রাজত্বে রাজ্যে শিল্পে কোনও উন্নয়ন হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পরেও শিল্পে বিনিয়োগ বাংলায় হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাঁরই আগে বিজেপির দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তপন শিকদার ও তথাগত রায় এবং বর্তমান সভাপতি রাহুল সিংহ মমতা-সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। তাঁদের বক্তব্যে স্পষ্ট, আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রচারে সিপিএম, কংগ্রেসের পাসাপাশি তৃণমূলের সমালোচনাও প্রাধান্য পাবে। বিজেপি-র সমালোচনাকে অবশ্য কোনও গুরুত্ব দিতে চান না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। তবে তিনি এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্যও করতে চাননি।
সারদা-কাণ্ডে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষকে গ্রেফতারের পরে কংগ্রেস-সিপিএম সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুর আরও চড়া করেছে। বিজেপিও ভোটের আগে রাজ্য জুড়ে এই দাবিতে আন্দোলন জোরদার করতে চায়। এ দিন রাহুলবাবু ঘোষণা করেন, সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবিতে বিজেপি আগামী ১৩ ডিসেম্বর রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবে। |