ঠিক হল হেলিকপ্টার পরিষেবার ভাড়া ও রুট
লকাতা থেকে মালদহ ১৩০০ টাকা, বালুরঘাট ১৫০০ টাকা, শান্তিনিকেতন ১৫০০ টাকা, গঙ্গাসাগর ১৫০০ টাকা এবং দুর্গাপুর ৪২০০ টাকা। যাত্রী-পিছু এমনই ভাড়ার হার নিয়ে শুরু হওয়ার পথে কলকাতা থেকে জেলায় ছোট রুটের প্রস্তাবিত হেলিকপ্টার পরিষেবার পাইলট প্রকল্প। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পবনহংস-কর্তাদের বৈঠকে ভাড়ার এই হার ঠিক হয়েছে। আপাতত এক-এক রুটে সপ্তাহে এক দিন চলবে ওই কপ্টার। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে অনুসারেই কম ভাড়ায় এই পরিষেবা পাওয়ার কথা যাত্রীদের। কিন্তু একই সঙ্গে প্রস্তাবিত ভাড়ার তালিকা দেখে ভাড়ার ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ভাড়ার হার ট্রেনের বাতানুকূল প্রথম শ্রেণির কাছাকাছি হবে বলে বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পরিবহণসচিব। সেই হিসেবে মালদহ পর্যন্ত যেখানে ট্রেনভাড়া প্রায় ১২৫০ টাকা, হেলি-পরিষেবার ভাড়া ধরা হয়েছে ১৩০০ টাকা। বালুরঘাটের ক্ষেত্রেও ভাড়ার হার প্রায় তেমনই। অথচ, দুর্গাপুরের ভাড়া ধরা হয়েছে ৪২০০ টাকা, যার ট্রেনভাড়া দেড় হাজারেরও কম। সড়কপথেও তিন ঘণ্টার দূরত্বে বিশেষ খরচ হয় না। আর এখানেই প্রশ্ন, মালদহ, বালুরঘাটের ক্ষেত্রে যেখানে হেলিকপ্টারের ভাড়া প্রস্তাব মতো ট্রেন ভাড়ার কাছাকাছি, সেখানে দুর্গাপুর যেতে তুলনামূলক ভাবে ভাড়ার হার এতটা বেশি কেন?
আলাপনবাবুর ব্যাখ্যা, অন্ডালে নতুন বিমানবন্দরকে প্রচারের আলোয় আনতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রোপলিস এই কপ্টারের সাতটি আসন ভাড়া নিচ্ছে। যাত্রী না হলেও আসন-পিছু প্রতিটি উড়ানে ৪২০০ টাকা করে রাজ্যকে দেবে সংস্থা। অর্থাৎ, যাত্রী হোক বা না হোক, এই রুটের প্রতি উড়ানে সাতটি আসনের ভাড়া সরকারের হাতে আসা নিশ্চিত। সেই কারণেই অন্য গন্তব্যগুলিতে কম ভাড়া নিলেও পুষিয়ে যাবে বলে ব্যাখ্যা করেছেন আলাপনবাবু। তিনি বলেন, “আপাতত এই ভাড়ার হার নিয়েই শুরু করছি আমরা। বিভিন্ন সময়ে তা পর্যালোচনার সুযোগ থাকছে।”
অন্য দিকে, বেঙ্গল এরোট্রোপলিসের এম ডি পার্থসারথি ঘোষের ব্যাখ্যা, তাঁদের সমীক্ষা অনুযায়ী দুর্গাপুর, বর্ধমান এবং সংলগ্ন শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে বছরে সাড়ে ছ’লক্ষ যাত্রী কলকাতা এসে বিমান পরিষেবা ব্যবহার করেন। নির্দিষ্ট সময়ের উড়ান ধরতে অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের রাতে এসে কলকাতায় থাকতেও হয়। ফলে এক দিকে যেমন দমদম আসতে সড়ক বা রেলপথের চেয়ে আকাশপথে অনেকটা সময় সাশ্রয় হবে, তেমনই খরচও বাঁচবে বলে এই হেলি-পরিষেবা যাত্রী-সংখ্যায় পুষিয়ে দেবে বলে মনে করছেন তিনি। এরই সঙ্গে পার্থবাবুর বক্তব্য, “কলকাতা থেকে জেলায় এই পরিষেবা মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। তাঁর পাশে থেকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি আমরা।”
এ দিন বৈঠকের পরে পরিবহণসচিব জানান, পাইলট প্রকল্পে হেলিকপ্টারটি সোমবার কলকাতা থেকে দুর্গাপুর, বুধবার কলকাতা থেকে মালদহ হয়ে বালুরঘাট, শনিবার কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন এবং রবিবার কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর যাবে। শান্তিনিকেতন থেকে ফেরার পথে দুর্গাপুর হয়ে কলকাতা ফিরবে হেলিকপ্টার। কোচবিহারে এর জন্য এয়ারস্ট্রিপ চওড়া করার কথা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আলাপনবাবু জানান, পাইলট প্রকল্প সফল হলে আরও ভাল ভাবে এই পরিষেবা চালু করা যেতে পারে। তিনি বলেন, “মানুষকে কম পয়সায় দ্রুত যাতায়াতের সুবিধা করে দিতে এই হেলিকপ্টার পরিষেবার ব্যবস্থা করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে রোগীদের সুবিধা হবে। বিভিন্ন কাজে কলকাতায় যাঁরা দ্রুত যাওয়া-আসা করতে চান, সুবিধা হবে তাঁদেরও।” এই পরিষেবায় দুর্গাপুর যেতে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট এবং মালদহ ও বালুরঘাট যেতে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা সময় লাগবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.