অস্থায়ী শিক্ষকই ভরসা, খুলল বড়বাড়ি বিদ্যালয় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
অবশেষে শুক্রবার ঝাড়গ্রামের বড়বাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজা খুলল। অস্থায়ী ভাবে বাবুজি হেমব্রম নামে এক শিক্ষককে এই স্কুলে পাঠানো হয়েছে। বাবুজি ঝাড়গ্রাম ব্লকের চুবকা অঞ্চলের তারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক। তারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও দু’জন শিক্ষক থাকায় বাবুজিকে অস্থায়ী ভাবে ওই স্কুল থেকে এনে বড়বাড়ি স্কুলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা বড়বাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচার-ইন-চার্জ দুরন্ত দাস কাজে যোগ না দেওয়া পর্যন্ত বাবুজিবাবুকে ওই স্কুলের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিন স্কুল খুললেও সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। আজ, শনিবার বাবুজিকে ‘অন ডিউটি’ হিসেবে বাধ্যতামূলক ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্ট্রি এডুকেশন) কোর্সের প্রশিক্ষণ নিতে খড়্গপুর যেতে হবে। ফলে, আজ বন্ধ থাকবে ওই বিদ্যালয়। বাবুজি জানিয়েছেন, সোমবার থেকে যথারীতি তিনি স্কুলে আসবেন। |
|
নতুন মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে পড়ুয়ারা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
একমাত্র শিক্ষক ‘টিচার-ইন-চার্জ’ দুরন্ত দাস অসুস্থ হয়ে লম্বা ছুটিতে চলে যাওয়ায় বড়বাড়ি প্রাথমিক স্কুলটি গত সেপ্টেম্বর থেকে কার্যত তিন মাস বন্ধ ছিল। গ্রামবাসী ও অভিভাবকদের নিরন্তর অভিযোগের ভিত্তিতে পুজোর ছুটির পর ২৫ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় লালগেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে সাময়িক ভাবে স্কুলটি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৩ নভেম্বর থেকে ফের বন্ধ হয় স্কুলটি। দীর্ঘ কয়েক মাস স্কুলে মিড ডে মিল রান্নাও বন্ধ। বিষয়টি জানার পর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মুর নির্দেশে বাবুজিকে বড়বাড়ি স্কুলে সাময়িক দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান মানিকপাড়া প্রাথমিক চক্রের ভারপ্রাপ্ত অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জয়ন্তী জানা।
এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ বড়বাড়ি গ্রামে পৌঁছে স্কুলের দরজা খোলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবুজি হেমব্রম। এ দিন ১৬ জন পড়ুয়া এসেছিল। তবে এ দিন মিড ডে মিল রান্না হয়নি। গ্রামবাসীরা জানালেন, রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বসহায়ক দলের মহিলারা চাষের কাজে চলে গিয়েছেন। দীর্ঘদিন পরে স্কুল খোলায় এ দিন দৃশ্যতই খুশি দেখায় ছাত্রছাত্রীরা। তবে বাবুজি অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের ডেকে জানিয়ে দেন, শনিবার তিনি ডিএলএড কোর্সের প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন। এই প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক, তাই শনিবার তিনি স্কুল বন্ধ রাখতে তিনি বাধ্য হচ্ছেন। সোমবার থেকে স্কুলে মিড ডে মিল চালু করার জন্য গ্রামবাসীদের সহযোগিতা চান তিনি।
স্বপন মুর্মু বলেন, “ওই স্কুলে আরও একজন শিক্ষককে পাঠানো হবে।” কিন্তু প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা দফতরের তথ্য বলছে, জেলার প্রায় ৮০টি স্কুলে একজন মাত্র শিক্ষক। মানিকপাড়া প্রাথমিক চক্রের ২০টি স্কুলে মাত্র একজন করে শিক্ষক। তাই এই আশ্বাসের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে বড়বাড়ির বাসিন্দারা।
|
পুরনো খবর: তালাবন্ধ স্কুলে শিক্ষকের অপেক্ষায় শোভন-উমারা |
|