রঞ্জি ট্রফি
সেঞ্চুরির পর সৌরাশিসের বলের দিকেও তাকিয়ে বাংলা
ক অরিন্দম দাস। আর সঙ্গে অলরাউন্ডার সৌরাশিস লাহিড়ী। দুজনে মিলেই তুললেন ২৭৩। আরও যাঁদের ব্যাট থেকে রান পাওয়ার আশায় দলে নেওয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই মিলে বাংলাকে দিলেন ১০৩। শততম রঞ্জি খেলতে নামা বাংলা অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল ২৮ আর টেলএন্ডাররা দিলেন ১০। প্রথম ইনিংসের শেষে বাংলার স্কোরবোর্ডে যে ৪৩১ রান, তা অরিন্দম-সৌরাশিসের ঘাম-রক্তেরই ফসল।
প্রায় চোদ্দো বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে মাত্র একবার সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন যিনি, সেই সৌরাশিসই যে এ দিন বাংলাকে বড় ইনিংস গড়তে প্রধান ভূমিকা নেবেন, কে ভেবেছিল? যাঁদের কাছে সেই প্রত্যাশা ছিল, তাঁরা তো সার্ভিসেস ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে ক্রিজে গেলেন আর ফিরলেন! অরিন্দমের সঙ্গে ৫৫ রান যোগ করার পর সৌরাশিস বহু দিনের বন্ধু লক্ষ্মীরতনের সঙ্গেও গড়লেন সমান রানের পার্টনারশিপ। মূলত এই দুটো পার্টনারশিপ এবং আগের দিন ১২৯ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ আর দ্বিতীয় উইকেটে অরিন্দম-শুভময়ের ৭০-এর যুগলবন্দি বাংলাকে চারশোর গণ্ডি পার করাল।
তবে এমন প্রাণহীন, ধীরগতির উইকেটে এই রানও যথেষ্ট কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে পালামের এয়ারফোর্স গ্রাউন্ডে। দিনের বেশির ভাগ সময় ব্যাট করা সৌরাশিস বলছিলেন, “সত্যিই এমন স্লো উইকেটে দ্রুত রান তোলাটা যেমন কঠিন, তেমন বোলারদের পক্ষেও বেশ কঠিন এই পিচে উইকেট তোলা। তবে আমার মনে হয়, আমরা যে রানটা তুলেছি, সেটা খারাপ নয়। এখন কাল আমরা যদি ঠিকঠাক বল করতে পারি, তা হলে এই রান নিয়েই লড়াই করা যাবে।”
এই ‘ঠিকঠাক’ বোলিংটা যে ঠিক কী, তা অবশ্য স্পষ্ট বলছেন না বাংলার অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। দু’দিন ধরে যে ভাবে অফস্পিনার কোটেশ্বর রাওকে ৪৯ ওভার এবং বাঁহাতি স্পিনার রাহুল কনোজিয়াকে ৩৯ ওভার বল করালেন সার্ভিসেস অধিনায়ক, তাতে এটা পরিষ্কার, এই মরা উইকেটে টার্ন খোঁজার চেষ্টায় ছিলেন স্পিনাররা। বাংলার ছয় ব্যাটসম্যানকে ফেরালেন স্পিনাররা, তার মধ্যে কোটেশ্বরেরই চার। বাংলাকেও নিজের স্পিনারদের প্রধান অস্ত্র করতে হবে। অর্থাৎ, বোলার সৌরাশিসকেও দায়িত্ব নিতে হবে। আছেন ইরেশ সাক্সেনা। অনুষ্টুপ মজুমদারও পার্টটাইম স্পিনারের কাজ চালাতে পারেন। মধ্যপ্রদেশ ম্যাচে ইনিংসে তিন উইকেট নিয়েছিলেন। সৌরাশিসের আশা, “শনিবার তৃতীয় দিন থেকে হয়তো উইকেট ভাঙা শুরু করবে।” তখন বাংলার স্পিন-ম্যাজিক কাজ করে কি না, সেটাই দেখার।
তার আগে এ দিন ব্যাটে মাত করেন সৌরাশিস। দশটি বাউন্ডারি মারেন। কিন্তু তারও ইনিংসের গতি অরিন্দমের ইনিংসের মতোই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের সবচেয়ে বেশি রানের (১৬৫) ইনিংস খেলতে অরিন্দম যেখানে নেন ৩০৬ বল, সেখানে সৌরাশিস ১০৮-এ পৌঁছতে খেলেন ২১২ বল। বারো বছরে এই নিয়ে তৃতীয় বার দেড়শো পেরোলেন অরিন্দম। প্রচণ্ড সতর্ক ইনিংসে একটাই অসাবধানী শট খেলেন ‘ডন’, যা দ্বিতীয় স্লিপের উপর দিয়ে উড়ে যায়। শেষমেশ কোটেশ্বরের স্পিনে অরিন্দম বোল্ড হওয়ার সময় বাংলা ২৯২।
এই অবস্থা থেকে দলকে চারশোর দিকে টেনে নেওয়ার জন্য যখন অনুষ্টুপ, লক্ষ্মীদের দিকে তাকিয়ে বাংলা শিবির, তখন প্রথম জন আট রান করে ফিরে যান। লক্ষ্মীর অবশ্য স্কোরবোর্ডের গতি বাড়ানোর দিকে নজর ছিল। কনোজিয়াকে কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি মারা ছাড়াও কোটেশ্বরকে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন। কিন্তু পেসার সূরজ যাদবের বাউন্সার পুল করতে গিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন। বাংলার তখনও চারশো ছুঁতে ২১ রান বাকি।
একা সৌরাশিসের হাতে তখন ইনিংসের রাশ। ব্যক্তিগত ৯৬-এ কোটেশ্বরকে হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে কনোজিয়াকে ক্যাচ দিয়ে ‘জীবন’ পাওয়ার পর সেই কনোজিয়ার বলে এক রান নিয়ে সেঞ্চুরিতে পৌঁছন সৌরাশিস। বললেন, “সেঞ্চুরিটা লক্ষ্মীকে উৎসর্গ করছি। আমার আগের সেঞ্চুরির উপরে রাখব এটা। আগেরটা ছিল সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজকোটে। সেখানে ক্রিজে সঙ্গী পেয়েছিলাম মনোজ তিওয়ারিকে। এখানে প্রায় একাই দলকে টানার দায়িত্ব নিতে হয়েছে। এটা অনেক বেশি চাপের মধ্যে খেলা।”

সংক্ষিপ্ত ইনিংস
বাংলা ৪৩১ (অরিন্দম ১৬৫, সৌরাশিস ১০৮, কোটেশ্বর ৪-১২৩, কনোজিয়া ২-৯১)
সার্ভিসেস ৩৯-০ (প্রতীক ব্যাটিং ২৪, অংশুল ব্যাটিং ১৫)।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.