পৃথিবী বহু দূরে। কিন্তু তা বলে কি ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’-র ব্যাপক ভোজন মহাকাশেই মারা যাবে?
মোটেও না। আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রেও যাতে কব্জি ডুবিয়ে হরেক কিসিমের জিভে জল আনা খাবার খেতে পারেন তাঁরা, সে জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করে দিয়েছে নাসা। থ্যাঙ্কস গিভিং ডে নিয়ে তাই উচ্ছ্বসিত ওঁরা ছ’জন।
ওঁরা মানে নাসার ছ’জন মহাকাশচারী। আপাতত যাঁদের ঠিকানা আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র। থ্যাঙ্কসগিভিং ডে-র নৈশাহারে তাঁদের জন্য থাকছে হরেক কিসিমের খাবার। সুস্বাদু ওলের তরকারি, রান্না করা সবুজ বরবটী, মশলামাখা আলু সেদ্ধ তো বটেই, আছে টার্কিও। নাসার দাবি, দু’শোরও বেশি রকমের পদ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের ভাঁড়ারে। সব কিছুই অবশ্য রান্না করে প্যাকেটে ভর্তি করে দেওয়া। ফলে, থ্যাঙ্কস গিভিং ডে-তে ঘাম ঝরিয়ে হাতা-খুন্তি নাড়ানোরও প্রয়োজন নেই। শুধু খাবার গরম করো, প্যাকেট কাটো আর খাও। কোনও ঝামেলা নেই, শুধুই সুস্বাদু খাবারে রসনার তৃপ্তি।
তবে থ্যাঙ্কস গিভিং ডে উপলক্ষে কাজ থেকে কোনও ছুটি নেই মহাকাশচারী মাইক হপকিনস এবং রিক মাস্ত্রাচ্চিওর। নির্ধারিত দৈনিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়াও এ দিন ধূমকেতু আইসনকে পর্যবেক্ষণ করবেন তাঁরা। তবে ছুটি পেয়েছেন তাঁদের তিন রুশ সহকর্মী ওলেগ কতোভ, সের্গেই রিয়াজানস্কি এবং মিখাইল তিউরিন। তাতে অবশ্য দুঃখিত নন মাইক হপকিনস।
মহাকাশ থেকে পাঠানো ভিডিওতে বললেন, “বহু মানুষ জিজ্ঞাসা করেন ছুটির দিনে আমরা মহাকাশকেন্দ্রে কী করি। এটা সত্যি আমরা এখানে পরিবারের খুব অভাব বোধ করি, কিন্তু মহাকাশে কাটানোটাও খুব মজার।” আর এই বহুবিধ জিভে জল আনা পদের সমাহারে সেই মহাকাশবাস যে আরও সুস্বাদু হবে, তা-ও পরিষ্কার।
তবে বিষয়টা যে চিরকালই এমন ছিল, তা নয়। দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশবাসের প্রথা তখনও শুরু হয়নি। মাঝে মাঝে অল্প দিনের জন্য সেখানে যেতেন মহাকাশচারীরা। তখন না ছিল এত খাবারের পদ, না ছিল মহাকাশে বিশেষ দিন উদ্যাপনের পরিকল্পনা।
এখন অবশ্য সবকিছুই আছে।
বলা যায়, নাসার তরফে এ গুলি আসলে তার মহাকাশচারীদের থ্যাঙ্কস গিভিং ডে-র উপহার। যা চেখে দেখতে দেখতে মহাকাশচারীরা মনের আনন্দে বলে উঠতেই পারেন, পৃথিবীতে যে টার্কি আছে, আমাদের রান্নাঘরেও সেই টাকির্ই আছে। |