নিরাপত্তারক্ষীদের উপর ফের মাওবাদী হামলা ছত্তীসগঢ়ে। বুধবার সকালে ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুর জেলায় সিআরপির টহলদারি বাহিনীর উপর মাওবাদী হামলায় নিহত হয়েছেন ৪ সিআরপি জওয়ান। সিআরপি সূত্রের খবর নিহতদের মধ্যে অমিতাভ মিশ্র নামে এক কনস্টেবলের বাড়ি বাঁকুড়ার খাতরা মহকুমার সিমলাপাল এলাকার বিক্রমপুর গ্রামে।
মাওবাদী দমন অভিযানের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি আর কে ভিজ জানান, ওই এলাকায় কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল সিআরপি আধিকারিকদের। তার আগে রাস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে টহল দিচ্ছিলেন জওয়ানেরা। কিন্তু মোদকপাল এলাকায় ওই টহলদারি বাহিনীর উপর হামলা চালায় প্রায় ১০০ মাওবাদীর একটি দল।
এ দিন বিকেলেই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে দুঃসংবাদ। ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের গুলিতে নিহত হয়েছে একত্রিশ বছরের তরতাজা ছেলে। বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার বিক্রমপুর গ্রামে বাড়ি অমিতাভের। বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, ভাই, স্ত্রী ও সদ্যোজাত মেয়ে। “আমার ছেলে তো কোনও দোষ করেনি। ও তো দেশের হয়ে কাজ করছিল। তা হলে ওকে মেরে কী পেল মাওবাদীরা?”কান্নাভেজা গলায় বললেন বাবা লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র।
মাত্র এক বছর আগেই বাঁকুড়ার আর এক মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা সারেঙ্গার নিমডাঙা গ্রামের তরুণী সুবর্ণার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল অমিতাভের। এ বছর পুজোর আগে আসন্নপ্রসবা স্ত্রীকে দেখতে বাড়ি এসেছিলেন অমিতাভ। বাড়ি আসার কিছু দিন পরেই তাঁর মেয়ে হয়। ভাইফোঁটার পরের দিন ফিরে যান ছত্তীসগঢ়ে। বাবা লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র বলেন, “যাওয়ার সময় ছেলে বলে গিয়েছিল, নাতনির অন্নপ্রাশনের সময় আবার আসবে। তার আগেই খবর পেলাম, ছেলে শহিদ হয়েছে!” ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলতে ভালবাসতেন অমিতাভজানালেন তাঁর কাকা কিরীটী মিশ্র। তাঁর কথায়, “পেটানো চেহারা। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বলত, সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। বিএ পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই ও সিআরপি-তে যোগ দেয়।” বিকেল থেকে প্রতিবেশীরা বাড়িতে। অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে সুবর্ণা ছিলেন বাপের বাড়িতে। খবর পেয়ে এসেছেন বিক্রমপুরে। দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ অমিতাভর এক সহকর্মী কিরীটীবাবুর মোবাইলে দুঃসংবাদ দেন। |
