রসুলপুরে বন্দর গড়তে পুরনো আগ্রহপত্র নাকচ
পূর্ব মেদিনীপুরের রসুলপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়তে আগের আগ্রহপত্র (লেটার অফ ইনটেন্ট) নাকচ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। পূর্বতন বাম সরকারের আমলে যা পেশ করেছিল মুম্বইয়ের সংস্থা আম্মালাইন্স।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, শিল্প দফতর মনে করে শুধু একটি সংস্থাকে সুযোগ দিলে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই পুরনো আগ্রহপত্র বাতিল করে নিলাম ডেকে বন্দর তৈরির প্রক্রিয়া ফের গোড়া থেকে শুরু করতে চায় তারা।
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, আম্মালাইন্সের আগ্রহপত্র নাকচ করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, “সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে এই বন্দর তৈরি হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে সব সংস্থার জন্যই দরজা খোলা রাখতে হবে। এ ভাবে একটি সংস্থাকে কাজ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে নিলামে নতুন করে যখন দরপত্র চাওয়া হবে, তখন তারাও তা জমা দিতে পারবে।”
অবশ্য নতুন করে প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্তে সরকারি শিলমোহর পড়লেও, সংস্থার কাছে চিঠি পৌঁছেছে কি-না, তা স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে ই-মেল এবং ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও সংস্থার তরফ থেকে উত্তর মেলেনি।
সরকারি সূত্রে খবর, বন্দর গড়তে নিলামের মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থা বাছতে চেয়েছিল পূর্বতন বাম সরকারও। কিন্তু তা তৈরির জন্য আগ্রহ দেখিয়ে আম্মালাইন্স যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, বিপত্তি বাধে তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মেধাসত্ত্ব অধিকার (ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট) নিয়ে।
কারণ, যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বন্দরের চ্যানেল তৈরির কথা ছিল, তার পেটেন্ট আম্মালাইন্সের ঝুলিতে। ফলে ওই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য তাদের দিয়েই বন্দর তৈরি করানোর শর্ত দেয় সংস্থাটি। এ নিয়ে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ওয়েস্টবেঙ্গল মেরিটাইম বোর্ডের সঙ্গে। কিন্তু ওই শর্ত নিয়ে চাপান-উতোরের কারণে তা হয়নি। পরে বিধানসভা ভোটের দামামা বাজায় ধামাচাপা পড়ে যায় বিষয়টি।
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের শেষে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় যে, সাগর এবং রসুলপুরে গভীর বন্দর তৈরি হবে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে। নতুন করে চাওয়া হবে দরপত্র। আন্তর্জাতিক স্তরে তা চাওয়া হবে বলে তখনই জানিয়েছিলেন শিল্পমন্ত্রী। বলেছিলেন, এই পুরো প্রক্রিয়াটি দেখাশোনা করবে ‘ট্র্যানজাকশন অ্যাডভাইজর’। রাজ্য অনুমোদিত ৯ উপদেষ্টা সংস্থার কোনও একটি এই দায়িত্ব পাবে। তিনটি পর্যায়ে নিলাম হওয়ার কথা। প্রথমে চাওয়া হবে রিকোয়েস্ট ফর পার্টিসিপেশন বা প্রকল্পে সামিল হতে অনুরোধপত্র। এর পর ধাপে ধাপে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক দরপত্র চাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, রসুলপুরে বন্দর তৈরির পরিকল্পনা প্রথম দানা বাঁধে বাম জমানায়। ২০১০-এ রাজ্যের সঙ্গে যৌথ ভাবে তা গড়ার আগ্রহ দেখায় মেকা গোষ্ঠীর আম্মালাইন্স। খাতায়-কলমে সেই আগ্রহ দেখিয়ে প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা রিপোর্টও পেশ করে বন্দর-পরিকাঠামো নির্মাণে দক্ষ ওই সংস্থা। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, প্রকল্প গড়তে প্রয়োজন ৬,০০০ কোটি টাকার লগ্নি। ৫০-৬০ হাজার টন পণ্য পরিবহণ করা যাবে সেখানে। জমি বেশি লাগবে না। কারণ, সমুদ্রবক্ষ থেকেই জমি ‘রিক্লেম’ বা পুনরুদ্ধারের প্রযুক্তি কাজে লাগানো হবে। তবে রাজ্যের নিলামের সিদ্ধান্তে সে সব পরিকল্পনা আপাতত জলে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.