অবরোধ বেড়ে ৬০ ঘণ্টা, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জামাত
ছিল ৪৮ ঘণ্টা, বাড়িয়ে করা হল ৬০ ঘণ্টা। অর্থাৎ মঙ্গল-বুধবারের পরে বিএনপি-জামাতে ইসলামির অবরোধে বৃহস্পতিবারও বিপর্যস্ত হতে চলেছে বাংলাদেশের জনজীবন। প্রথম দু’দিনে আন্দোলনের নামে রেললাইন ওপড়ানো, গাড়িতে আগুন ও বেপরোয়া বোমাবাজির বলি হয়েছেন ১৫ জন। এঁদের অধিকাংশই সাধারণ মানুষ, রাস্তায় বেরিয়েছিলেন একান্ত প্রয়োজনে।
অনেকেই ভেবেছিলেন, বুধবারটা কাটিয়ে দিলেই এ বারের মতো শান্তি। কিন্তু এ দিন দুপুরেই বিএনপি-র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অবরোধের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা করে বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত। দু’দিনের নাশকতা ও হিংসার ধরনে স্পষ্ট, বিএনপি বড় শরিক হলেও বাংলাদেশ জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জামাত ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরের কর্মীরা। সঙ্গে তাল দিয়েছেন বিএনপি কর্মীরা। আর তাদের আক্রোশের মূল নিশানায় ছিল রেল। এই দু’দিনে রেলপথের এত জায়গায় জঙ্গি কায়দায় নাশকতা চালানো হয়েছে, গোপনে রেললাইন উপড়ে ট্রেন উল্টে দেওয়া হয়েছে, ভাঙচুর করে ট্রেনের কামরায় আগুন দেওয়া হয়েছে অতীতে কোনও আন্দোলনে এমনটা ঘটেনি। এর ফলে ঢাকা থেকে প্রায় সব রুটের ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্তত পাঁচটি দূরপাল্লার ট্রেনের ইঞ্জিন বা একাধিক কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। রেলের এক কর্তার কথায়, ভারতের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ‘বাংলাদেশ রেল’কে আধুনিক করে তোলার পথে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়েছিল এই সরকার। এই জন্যই হয়তো নাশকতার প্রধান নিশানা করা হয়েছে রেলকে। এই কর্তা বলেন, দু’দিনে যে মাত্রার নাশকতা চালানো হয়েছে, তাতে শুধু যে কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে তা-ই নয়, রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হতে বহু সময় লেগে যাবে। দুর্ভোগ পোয়াতে হবে সাধারণ মানুষকেই।
বিএনপি ও জামাতে ইসলামির ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে
ঢাকার রাস্তায় চলছে বাস ভাঙচুর। বুধবার। ছবি: রয়টার্স।
এ দিন রাজধানী ঢাকার পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত থাকলেও দেশের বাকি অঞ্চলে ব্যাপক হিংসা ও হানাহানির ঘটনা ঘটেছে। সাতক্ষীরায় জামাতের কর্মীরা বেপরোয়া গুণ্ডামি চালিয়েছে। গাজিপুরে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য খুন হয়েছেন। টহলদারি চালানো পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ির ওপরও বোমা হামলা চালানো হয়েছে। চট্টগ্রামে অটোরিকশা জ্বালিয়ে দেওয়ায় পুড়ে মারা গিয়েছেন এক আরোহী। মাথায় বোমার আঘাতে ঢাকায় মারা গিয়েছেন ব্যাঙ্ককর্মী এক মহিলা। সব মিলিয়ে আলোচনার আবহাওয়া নষ্ট হয়ে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ জুড়ে। এ জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছেন সরকার ও বিরোধীপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দিনও বিরোধীদের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, জামাতে ইসলামি এ বার নিজ দলের পরিচয়ে ভোটে অংশ নিতে পারবে না বলেই নির্বাচন ভেস্তে দেওয়ার ছুতো খুঁজছে বিএনপি।
গত এক মাস ধরে একের পরে এক হরতাল ও অবরোধে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম আকাশ ছুঁয়েছে। মাছ-মাংস বা শাক-সব্জিও বাজারে আসতে পারছে না। ঢাকার এক হোটেল ব্যবসায়ী শিবুকান্তি দাসের কথায়, বিরোধী জোট এ বার হরতাল না ডেকে অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করায় সাধারণ মানুষ বেশি বিভ্রান্ত। অন্য বার হরতালের মধ্যেও বহু মানুষ ঢাকায় আসেন। কিন্তু এ বার রাজধানী ফাঁকা। অধিকাংশ হোটেলের ঘরও ফাঁকা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.