সোমবার নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের টানা অবরোধে স্তব্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশের জনজীবন। রেল ও সড়ক পথে ব্যাপক নাশকতা ছাড়াও পুলিশের ওপর আক্রমণ ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে প্রায় সর্বত্র। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র এক জওয়ান-সহ মোট ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা শতাধিক। বিএনপি নেতৃত্ব দাবি করেছেন, সরকারের সাজানো নক্শা মেনে নির্বাচন কমিশন ৫ জানুয়ারি ভোটের দিন ঘোষণা করায় দেশে আগুন জ্বলে উঠেছে। এই দায় সরকারের। শাসক আওয়ামি লিগ অভিযোগ করেছে, নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যেই নাশকতা ও হিংসায় মেতেছে বিএনপি-জামাত।
সোমবার খানিকটা আচমকাই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজি রকিবুদ্দিন। বিএনপি এই নির্ঘণ্ট প্রত্যাখ্যান করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দেয়। কিন্তু আওয়ামি লিগ ও জাতীয় পার্টির মতো দল, যারা নির্বাচনের পক্ষে, তারাও এই নির্ঘণ্টে খুশি হতে পারেনি। মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে প্রার্থী বাছাই করে মনোনয়ন জমা দেওয়া কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন, সব পক্ষ চাইলে ভোটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে। রকিবুদ্দিন আজ বলেন, “সব দল, সব প্রার্থী যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। এ জন্য সব বিকল্পই খোলা থাকছে।”
এর আগে তিন দফা লাগাতার ধর্মঘট ডেকেছে বিএনপি। কিন্তু নাশকতায় এ বারের অবরোধ কর্মসূচি সেগুলিকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। কাল রাতেই বেশ কিছু জায়গায় রেল লাইন উপড়ে ফেলা হয়। এর ফলে নেত্রকোণায় একটি দূরপাল্লার ট্রেনের তিনটি কামরা খাদে পড়ে যায়। আহত হন বেশ কিছু যাত্রী। বহু জায়গায় ট্রেন থামিয়ে কামরায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাছ কেটে রাস্তা বন্ধ করা ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি কর্মীরা। অনেক জায়গায় সরকার-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। কুমিল্লায় বোমার ঘায়ে প্রাণ হারিয়েছেন বিজিবি-র
এক সদস্য।
এই পরিস্থিতিতে বিশিষ্ট জনদের একটি দল রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে দেখা করে সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। এ বার তিনি দু’পক্ষকে আলোচনায় ডাকতে পারেন। |