সুকিয়া স্ট্রিটের পরে এ বার গড়পারের বাড়ি। সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতে আগেই তল্লাশি চালানো হয়েছিল। মঙ্গলবার তাঁর গড়পারের বাড়িতে তল্লাশি চালায় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। কুণালবাবুকে নিয়ে তদন্তকারী অফিসারেরা ভোরে ওই বাড়িতে যান। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষ বলেন, “ওই বাড়িতে সারদা সংস্থা সম্পর্কিত বেশ কিছু কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে।
এখন সেই সব নথি পরীক্ষা করে
দেখা হচ্ছে।”
কুণালবাবু গ্রেফতার হন শনিবার রাতে। রবিবার ভোরে তাঁকে নিয়ে তাঁর সুকিয়া স্ট্রিটের পৈতৃক বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ দিন পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর পৈতৃক বাড়ির কাছেই গড়পারের বাড়িতে কুণালবাবু তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন। তাই এ দিন ওই বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, কুণালবাবু শুধু সারদা সংস্থার মিডিয়া শাখার সিইও-ই ছিলেন না, তিনি ওই সংস্থার এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টরও ছিলেন। তিনি সংস্থার নানা গুরুত্বপূর্ণ কাগজে স্বাক্ষরও করতেন বলে পুলিশের দাবি। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সংস্থায় নতুন কোনও কর্মী এলে তাঁর নিয়োগপত্রে এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কুণালবাবুর সই থাকত। কুণালবাবু এগ্জিকিউটিভ অফিসার হওয়ায় সারদার নানা ধরনের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তাই সারদার আর্থিক তছরুপের সঙ্গে ওই সাংসদের জড়িত থাকা সম্ভাবনা রয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। পুলিশের দাবি, কুণালবাবু সারদার প্রধান কার্যালয় মিডল্যান্ড পার্কেও সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং অন্যদের সঙ্গে বৈঠক করতেন। কুণালবাবুর একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দারা জানান, তদন্তের স্বার্থে কুণালবাবু ও সুদীপ্তবাবুকে একসঙ্গে বসিয়েও জেরা করা হতে পারে।
এ দিন জেরার পরে পুলিশ নিশ্চিত, গ্রেফতার হওয়ার পর কুণালবাবুর ফেসবুকের পেজে যে-‘পোস্ট আপলোড’ হয়েছিল, সেটি তিনি করেননি। গ্রেফতারির পরে কুণালবাবুর তিনটি মোবাইলের কোনওটিই তাঁর কাছে ছিল না। ওই পোস্টটি কিছু ক্ষণ পরে তুলেও নেওয়া হয়। পুলিশি হেফাজতে থাকা অন্যান্য বন্দিকে যে-খাবার দেওয়া হয়েছিল, কুণালবাবুকে এ দিন সেই খাবারই দেওয়া হয়। গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণববাবু বলেন, “কুণালবাবু সুস্থই আছেন। চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে কোনও অস্বাভাবিকতা পাননি।” |