সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে তিনি পুলিশ হেফাজতে। অথচ তৃণমূলের সেই সাসপেন্ড সাংসদ কুণাল ঘোষকেই একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালো রেল। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী অবশ্য এর মধ্যে ভুল বা অন্যায় কিছু দেখছেন না।
কাঁচরাপাড়া ও জামালপুর ওয়ার্কশপের দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে ওই অনুষ্ঠানটি হয়। সেখানে আরও অনেকের সঙ্গে রাজ্যসভার সদস্য কুণালবাবুকেও আমন্ত্রণ জানান পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। এ দিন বিভিন্ন সংবাদপত্রে সেই অনুষ্ঠানটির বিজ্ঞাপনও প্রকাশিত হয়েছে। তৃণমূলের ওই রাজ্যসভার সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে গত শনিবার। আপাতত তিনি পুলিশ হেফাজতে।
কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার তিন দিন পরে রেলের মতো সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁকে কী করে আমন্ত্রণ জানানো হল, বিতর্ক তা নিয়েই। তৃণমূল নেতারা বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে প্রশ্ন তুললেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কিছুই বলার নেই। দল কিছু বলা মানে সাসপেন্ড হওয়া এই সাংসদকে গুরুত্ব দেওয়া। আমরা সেটা করছি না।” কুণালবাবুকে আমন্ত্রণ করা নিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রীর যুক্তি, “রেলের প্রোটোকল অনুযায়ী অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সাংসদদের নিমন্ত্রণ করা হয়। কুণালবাবুকেও সেই কারণেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি তো এখনও সাংসদ।” কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা চলছে, তিনি এখন পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন? অধীরবাবুর প্রতিক্রিয়া, “এক জন যত ক্ষণ সাংসদ থাকবেন, তত ক্ষণ নিয়মের মধ্যে সবই করা যায়। এমনকী কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ঘোষণা করার পরেও তিনি যত দিন সাংসদ থাকবেন, তত দিন সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোয় বাধা নেই।” রেলকর্তাদের বক্তব্য, কুণালবাবুর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ এনে মামলা শুরু হয়েছে। আদালত তাঁকে এখনও দোষী সাব্যস্ত করেনি। তা হলে সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকতে বাধা কোথায়? ওই দুই ওয়ার্কশপের দেড়শো বছরকে স্মরণ করতে এ দিন ডাকটিকিট ও খাম প্রকাশ করেন রেল প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে এ রাজ্যের তৃণমূল ও বামফ্রন্টের একাধিক সাংসদকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও কেউই উপস্থিত হননি। অধীরবাবু ছাড়া অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ওয়েস্টবেঙ্গল সার্কেলের পোস্টমাস্টার জেনারেল এস পন্ডা। |