পুলিশের নড়েচড়ে বসতেই লাগল দু’মাস! শেক্সপিয়র সরণি থানা মাস দুয়েক আগেই পরাগ মজমুদারের বিরুদ্ধে যে-মামলা রুজু করে তদন্তে নামতে পারত, গোয়েন্দারা তার তদন্ত শুরু করলেন শর্ট স্ট্রিট কাণ্ডের পরে।
মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে শর্ট স্ট্রিট কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত পরাগকে হাজির করিয়ে গোয়েন্দারা জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডাকাতি, ষড়যন্ত্র এবং অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কবে, কোথায় ডাকাতি হয়েছিল?
গোয়েন্দারা জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর ৯এ শর্ট স্ট্রিটের স্কুলবাড়িতে হামলা চালিয়েছিল ৪০-৫০ জন দুষ্কৃতী। ওই স্কুলবাড়ি ও লাগোয়া জমিটি এখনও পর্যন্ত যাঁর দখলে রয়েছে, সেই রতনলাল নাহাটা শেক্সপিয়র সরণি থানায় ১৬ সেপ্টেম্বর এফআইআর দায়ের করে জানান, পরাগের নেতৃত্বে ওই হামলা চালানো হয়। লুঠ করা হয় নাহাটার রিভলভার। লুঠ হয় তিনটি মোবাইল টেলিফোন এবং স্কুলের ১৭ হাজার টাকাও। ডাকাতদের হাতে নাহাটা-সহ চার জন জখম হন। এসএসকেএম হাসপাতালের ডাক্তার তাঁদের চিকিৎসা করেন। সেই রিপোর্ট জোগাড় করেছেন গোয়েন্দারা।
অভিযোগ পেয়ে শেক্সপিয়র সরণি থানা কি তদন্ত করেছিল?
গোয়েন্দারা সরাসরি জবাব দেননি। তবে তাঁরা জানান, ১১ নভেম্বর ৯এ শর্ট স্ট্রিটে অবৈধ প্রবেশ, হামলা এবং গুলিতে দু’জনের মৃত্যুর পরে ১৬ সেপ্টেম্বরের এফআইআরের কথা জানা যায়। দেখা যায়, তদন্তকারী অফিসার এফআইআর দায়ের করলেও যে-সব ধারায় মামলা দায়ের করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি।
এ দিন পরাগের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আদালতে জানান, অনধিকার প্রবেশ, ষড়যন্ত্র ও সংঘর্ষ বাধানোর মামলায় অভিযুক্তকে ১২ দিন নিজেদের হেফাজতে রেখেও পুলিশ তদন্তে এগোতে পারেনি। তা ছাড়া পরাগ সরাসরি ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত, এমন কোনও প্রমাণও আদালতে পেশ করতে পারেনি পুলিশ।
সরকারি আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাস আদালতে জানান, পুলিশি হাজতে থাকাকালীন পরাগ স্বীকার করেছেন, নাহাটার যে-রিভলভার লুঠ করা হয়েছিল, সেটি কোথায় রয়েছে, তা তিনি জানেন। লুঠ হওয়া তিনটি মোবাইলের হদিসও পরাগ জানেন বলেও তদন্তকারীদের দাবি।
১১ নভেম্বরের মামলায় (ষড়যন্ত্র, অনধিকার প্রবেশ, সংঘর্ষ বাধানো) পরাগকে জেল-হাজতে পাঠানোর আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। বিচারক বিশ্বরূপ শেঠকে তিনি বলেন, জেল-হাজতে থাকাকালীন পরাগের হাতের লেখা পরীক্ষা করা দরকার। পরাগের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত ল্যাপটপও ফরেন্সিক বিভাগকে দিয়ে পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন আছে। জেল-হাজতে থাকাকালীন অভিযুক্তকে আরও জেরা করা দরকার। অনধিকার প্রবেশ, ষড়যন্ত্র ও সংঘর্ষের মামলায় পরাগকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী আবেদন জানান, ডাকাতির মামলায় পরাগকে পুলিশি হাজতে নেওয়া দরকার। বিচারক জানান, সেই আবেদনের শুনানি হবে ৩ ডিসেম্বর। তত দিন ডাকাতির মামলায় অভিযুক্ত পরাগকে জেল-হাজতে রাখতে হবে। বিচারক জানান, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অনির্বাণ রায়ের সামনে অভিযুক্ত পরাগ হাতের লেখার নমুনা দেবেন। |