টানা লোকসান ও কাঁচামালের অভাবে গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ‘দ্য ওয়েস্ট দিনাজপুর স্পিনিং মিলে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা চালু হতে পারে, এই আশ্বাসে আশার আলো দেখছেন কর্মীরা।
রাজ্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের অধীনস্থ এই মিলের কর্মীরাও নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের কাছে লিখিতভাবে মিলের উৎপাদন চালু করার দাবি জানানো হলেও কোনও আশ্বাস মেলেনি বলে মিলের ডান-বাম দুটি কর্মী সংগঠনের দাবি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই স্পিনিং মিল চালু হতে চলেছে বলে আশ্বাস মেলার খবর পেয়ে আশাবাদী কর্মীরা।
আজ, মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে মালদহ পৌঁছবেন। মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক করার পর মুখ্যমন্ত্রী বৃন্দাবনী মাঠে জেলার ৫৫ টি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন ও ৩৭ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এরপর সড়ক পথে মুখ্যমন্ত্রী রায়গঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেবেন। রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক ও কাল, বুধবার কর্ণজোড়া এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা। সোমবার বিকালে রাজ্যের পরিষদীয় সচিব তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি অনুষ্ঠানের প্রশাসনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। পরে তিনি বলেন, “বাম সরকারের পরিকল্পনায় গলদের জেরে জেলার একমাত্র সরকারি লাভজনক শিল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বিগ্ন।” অমলবাবুর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় মিলের উৎপাদন চালুর চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি, মিলের কর্মীদের বেতন নিয়মিত করে ইচ্ছুক কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কর্ণজোড়ার দুটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী স্পিনিং মিলের উৎপাদন চালুর ব্যাপারে সরকারি ঘোষণা করতে পারেন। আইএনটিইউসি অনুমোদিত স্পিনিং মিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিল সরকার বলেন, “আমাদের আশা, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমবার রায়গঞ্জে এসে জেলার একমাত্র সরকারি শিল্প স্পিনিং মিলের উৎপাদন চালু ও কর্মীদের জীবিকার স্বার্থে উপযুক্ত ঘোষণাই করবেন।” সিটু অনুমোদিত স্পিনিং মিল ওয়ার্কার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র দেবের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী স্পিনিং মিলের উৎপাদন চালু করতে বেশকিছু সরকারি ঘোষণা করতে পারেন বলে আমরাও আশা করছি।”
স্পিনিং মিলে ৫১৪ জন স্থায়ী ও ১৭৯ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। মিলে তুলো থেকে সুতো উৎপাদন হত। টানা আর্থিক লোকসানের জেরে মিল কর্তৃপক্ষ তুলো সরবরাহকারী দুটি সংস্থাকে কয়েক বছর ধরে তুলোর দাম বাবদ বকেয়া ৮ কোটি টাকা মেটাতে পারেনি বলে অভিযোগ। ২০১১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সংস্থাগুলি তুলো সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় সুতো উৎপাদন কমতে থাকে। ওই বছরের জুলাই মাস থেকে তুলোর অভাবে মিলে উৎপাদন বন্ধ। |