বাঁকুড়া পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থাকল তৃণমূলের দখলেই। শুক্রবার এই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন হয়। ফল ঘোষণা হল সোমবার। মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের প্রার্থী লতিকারানি হালদার তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইয়ের শ্যামসুন্দর দত্তকে ৯৯৬ ভোটে পরাজিত করেছেন। লতিকাদেবী পেয়েছেন ১৭১৬ ভোট। শ্যামসুন্দরবাবু ৭২০ ভোট পেয়েছেন।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কংগ্রেস প্রার্থী দিলীপ দত্ত ৫০৬ এবং বিজেপি প্রার্থী অচিন্ত্য মহান্ত ২০১টি ভোট পেয়েছেন।
এ দিন লতিকাদেবীর জয়ের খবর পাওয়ার পরেই উল্লাসে ফেটে পড়েন ভোটগণনা কেন্দ্রে হাজির থাকা কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। শুরু হয় আবির খেলা। গণনাকেন্দ্র থেকে জয়ী প্রার্থীকে নিয়ে বিজয় মিছিল করতে করতে ওয়ার্ডে ফেরেন তৃণমূল কর্মীরা। ভোটগণনা পর্বের শুরু থেকেই কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপা। লতিকাদেবী তাঁরই মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। দলীয় প্রার্থীর জয়ের খবর পাওয়ার পরে দৃশ্যতই উল্লসিত হলেও আবির খেলায় অংশ নেননি। শম্পাদেবী বলেন, “দারিদ্রমুক্ত শহর সংক্রান্ত একটি সেমিনারে যোগ দিতে এ দিনই আমাকে দিল্লি চলে যেতে হচ্ছে। রাজ্যের ১৫টি পুরসভা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। এই কারণেই আবির খেলতে পারলাম না।” |
পুরপ্রধানের দাবি, “রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমুখী কাজকর্মকে যে সমর্থন করেন, এই জয়ে ফের তা প্রমাণিত হল।” বিজয় উল্লাসের সময় এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর, নিজের স্বামী সুকুমার হালদারের কথা মনে করে আবেগতাড়িত হয়ে উঠেছিলেন লতিকাদেবী। তাঁর কথায়, “আমি আগেও পুরভোটে দাঁড়িয়েছি, জিতেছি। প্রতিবারই জয়ের আনন্দ স্বামীর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছি। আজ খুব একা লাগছে।” তাঁর সংযোজন, “মানুষ আমার প্রতি ফের আস্থা রেখেছেন। ভাল কাজ করে এই ঋণ শোধ করব।”
তৃণমূল শিবিরে যখন খুশির হাওয়া, সিপিআই, কংগ্রেস এবং বিজেপি শিবিরে তখন দৃশ্যতই মনমরা। সিপিআই প্রার্থী শ্যামসুন্দর দত্তের দাবি, “এই জয় সন্ত্রাসের জয়। টাকা দিয়ে ও ভয় দেখিয়ে মানুষের ভোট পেয়েছে ওরা। এ সব না করলে ফলাফল উল্টো হত।” আর জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “ফলাফল শুনে আমি হতবাক! এটা আশা করিনি।” বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, “স্ট্রংরুমের এক দিকের দরজায় তালা ছিল না। তাই ভোটের ফলে কারচুপি হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ।” মহকুমাশাসক অবশ্য বলেছেন, “এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি।” আর জেলা তৃণমূলের এক নেতার কটাক্ষ, “হালে পানি না পেয়ে বিজেপি এখন কারচুপির গল্প ফাঁদছে।” |