ফল তৃণমূলের পক্ষে ২-১। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুরএই দুই পুরসভার তিন আসনের উপ-নির্বাচনেই শাসকদলের সঙ্গে যথেষ্ট লড়াই হয়েছে কংগ্রেসের। আর তৃতীয় স্থান পেয়েছে বামফ্রন্ট। রঘুনাথপুরের দু’টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটিতে জিতেছে কংগ্রেস। অন্য ওয়ার্ড গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। পুরুলিয়ায় জিতেছে তৃণমূল। উপ-নির্বাচনের ফলাফলে পুরসভারগুলির বোর্ড বদলের অবশ্য কোনও সম্ভবনাই তৈরি হচ্ছে না।
সোমবার সকাল থেকেই ভোটগণনা ঘিরে উত্তেজনা ছিল রাজনৈতিক দলগুলির স্থানীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে। সকাল দশটার মধ্যেই তিনটি আসনের ফল ঘোষণা হয়ে যায়। পুরুলিয়ার সাত নম্বর ওয়ার্ডে ৮৪৩ ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী জয়া ভুইঁয়াকে হারিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কবিতা দাস। ওই ওয়ার্ডে গতবার (২০১০ সাল) কংগ্রেস প্রার্থী গীতা মণ্ডল জিতলেও পরে তিনি দল বদলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করায় এই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন হয়েছে। পুরুলিয়ার তৃণমূল পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায় এবং ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা দলের মহিলা সংগঠনের শহর কমিটির সভাপতি মহুয়া দাসের মন্তব্য, “ভোটের আগে বিরোধীরা পুর-পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ তুলেছিলেন। ফলে এটা প্রমাণিত হয়ে গেল যে, পুরসভা বাসিন্দাদের উন্নতমানের পরিষেবা দিয়েছে বলেই বিশাল ব্যবধানে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী।” |
অন্য দিকে, রঘুনাথপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী তারিণী বাউরিকে ২১০ ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেসের রঘুনাথপুর শহর কমিটির সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। এই ওয়ার্ডে গত বার ভোটই হয়নি। ভোটের আগের দিন এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বুথমুখো হননি কোনও ভোটার। ফলে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর ধরে কউন্সিলরহীন অবস্থায় ছিল এই ওয়ার্ডটি। পুর-পরিষেবা না মেলার বিষয়টিকে এ বার উপ-নির্বাচনে অন্যতম প্রচারের বিষয় করেছিল কংগ্রেস ও সিপিএম। জেতার পরে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর প্রতিক্রিয়া, “আমরা বারবারই বলেছিলাম, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে বিমাতৃসুলভ আচরণ করেছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা। সেই কারণেই ভোটাররা তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের রায় দিয়েছেন।” পুরপ্রধান মদন বরাটের অবশ্য দাবি, “ওই ওয়ার্ডে আমাদের সাংগঠনিক ভোট আমরা ধরে রেখছি। কিন্তু, সিপিএমের ভোটের একাংশ পাওয়াতেই জিততে সমর্থ হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রদীপ রায়ের বক্তব্য, “ভিত্তিহীন মন্তব্য করছেন পুরপ্রধান। উপ-নির্বাচনে আমরা গুরুত্ব দিয়েই লড়েছি। তবে ভোট কমার কারণ দলীয় স্তরে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
রঘুনাথপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল কাউন্সিলরের মৃত্যু হওয়ায় সেখানে উপ-নির্বাচন হয়েছে। কংগ্রেস প্রার্থী লক্ষ্মীকান্ত বাউরিকে ৮২ ভোটে হারিয়েছেন তৃণমূলের ঝড়ু বাগদি। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, “এই ওয়ার্ডে তৃণমূল টাকা ছড়িয়েছে। না হলে আমরাই জিততাম।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পুরপ্রধানের বক্তব্য, “কংগ্রেসই বরং ১২ নম্বরে টাকা ছড়িয়ে জিতেছে।” ৯ নম্বরে জয়ের ফলে সব মিলিয়ে ১৩ ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর পুরসভাতে তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে হল ৭। |