সকাল ৮টা বেজে ১৫ মিনিট। আপ ক্যানিং লোকাল ছাড়তে বাকি আর ৫ মিনিট। ঠিক সেই সময়ে এক প্রৌঢ় একটি নোট নিয়ে স্টেশনের এমাথা থেকে ওমাথা দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। সঙ্গে কাতর আবেদন, “দাদা দিন না একটু ভাঙিয়ে। ট্রেনের টিকিট কাটব। না হলে ট্রেনটা ছেড়ে যাবে।”
এটা ব্যতিক্রমী ঘটনা হলেও ৫০০ টাকার নোট নিয়ে প্রতিদিন এরকমই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। কারণ ক্যানিং স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে বেশ কিছু দিন ধরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৫০০ টাকার নোট ভাঙিয়ে টিকিট দেওয়া। যাত্রীদের অভিযোগ, এমনিতেই ক্যানিং স্টেশনে ঘন্টাখানেক পর পর ট্রেন আসে। টিকিট কাটার জন্য দিতে হয় দীর্ঘ লাইন। তার উপরে লাইন ঠেলে যখন কাউন্টারে পৌঁছচ্ছেন, তখনই ৫০০ টাকার নোট থাকলে বলা হচ্ছে খুচরো করে নিয়ে আসুন। ৫০০ টাকার নোট নেওয়া এখন বন্ধ আছে। কাউন্টার থেকে ফিরিয়ে দেওয়ায় আশপাশের দোকানে গিয়ে শুনতে হচ্ছে কটুক্তি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও নানারকম জিনিসপত্র কিনে টাকা ভাঙাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।
কিন্তু শুধুই কি খুচরোর সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে টিকিট কাউন্টারে ৫০০ টাকা নেওয়া?
ক্যানিং স্টেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ৫০০ টাকার ১২টি নোট জমা পড়েছিল ক্যানিং স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে। দেখা যায়, সবক’টি নোটই জাল। গাফিলতির অভিযোগে সেই পরিমাণ টাকা কেটে নেওয়া হয় রেলকর্মীদের বেতন থেকে। অন্যদিকে, ভিড়ের মধ্যে আসল-নকল নোট বোঝাও সম্ভব হয় না। সেই কারণেই ৫০০ টাকার নোট নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন রেলকর্মীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, আসল-নকল টাকা পরীক্ষা করার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক মেশিন। ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য জায়গায় যদি সেই মেশিন থাকে, তাহলে রেলের কাউন্টারেই বা তা থাকবে না কেন?
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “কাউন্টারে ৫০০ টাকার নোট নেওয়া হবে না, এটা বলা বেআইনি। বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। এরকম সমস্যা হলে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |