দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট বা ওয়ান ডে টিম যা হয়েছে, তাতে খুব বিতর্কিত কিছু দেখছি না। জাহির খানকে ফিরিয়ে আনাটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত। ভারতের যে পেস টিম ওখানে যাচ্ছে, তারা প্রত্যেকে অনভিজ্ঞ। জাহিরের সেখানে থাকা মানে পেসারদের মেন্টরের কাজটাও একই সঙ্গে হয়ে যাওয়া। টেস্ট টিমে দেখলাম অম্বাতি রায়ডু আছে। ঠিক আছে। কিন্তু সব দেখে কেমন যেন মনে হচ্ছে, নির্বাচনে অভিজ্ঞতার ব্যাপারটা সে ভাবে দেখা হল না। মুরলী বিজয় বা শিখর ধবনএরা কেউই দক্ষিণ আফ্রিকায় আগে টেস্ট খেলেনি। পূজারা, কোহলি, রোহিতও নয়। তা ছাড়া বিজয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে রানও পায়নি। গৌতম গম্ভীরের মতো এক জন ব্যাক আপ ওপেনার থাকলে খুব ক্ষতি হত কি? বিজয়রা না পারলে অভিজ্ঞতা দিয়ে সামলানোর লোক কিন্তু এই ব্যাটিং লাইন আপে কেউ নেই!
একে তো চব্বিশ বছর ধরে টেস্ট টিমের ড্রেসিংরুমে সচিন তেন্ডুলকর নামের এক জন থাকার পর এই প্রথম তাকে টিমমেটরা পাবে না। সেটাও কিনা দক্ষিণ আফ্রিকায়! ভারতের মাটিতে যে বলটা কোমর পর্যন্ত উঠবে, সেটা ওখানে উঠবে বুক পর্যন্ত। ভারতে যেটা বুক পর্যন্ত যাবে, ও দেশে সেটা মাথায় হিট করার জন্য আসবে। শরীরের ভিতরের দিকে যে বলগুলো ঢুকে আসবে, সেগুলো ছাড়া প্রচণ্ড কঠিন হবে। তৈরি থাকতে হবে গায়ে শর্ট খাওয়ার জন্য। তার পর তুমি তোমার গেমপ্ল্যানে যাও। কিন্তু এই সব টিপসগুলো শিখরদের দেবে কে? সচিন তো সচিন, রাহুল-লক্ষ্মণ-সহবাগও নেই। এই ইন্ডিয়া টিমের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। যে কিনা সাত নম্বরে ব্যাট করে! এই অবস্থায় গম্ভীর থাকলে বোলিংয়ে জাহিরের মতোই অনভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের মেন্টরের কাজটাও একই সঙ্গে হয়ে যেতে পারত। |
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টিম |
টেস্টে: ধোনি (অধিনায়ক), বিজয়, ধবন, পূজারা, কোহলি, রোহিত, রাহানে, রায়ডু, ঋদ্ধিমান, জাহির, ভুবনেশ্বর, শামি, উমেশ, ইশান্ত, অশ্বিন, জাডেজা ও প্রজ্ঞান। |
ওয়ান ডে-তে: ধোনি (অধিনায়ক), ধবন, রায়না, যুবরাজ, কোহলি, রোহিত, রাহানে, অশ্বিন, ভুবনেশ্বর, শামি, উমেশ, রায়ডু, জাডেজা, ইশান্ত, মোহিত ও অমিত। |
|
অনেকে বলতে পারেন, গম্ভীরের মতো সিনিয়রকে নিয়ে গেলে তাকে কি না খেলিয়ে বসিয়ে রাখা যেত? সেক্ষেত্রে বিজয়-শিখর সফল ওপেনিং জুটিকে ভাঙাটাও কি ঠিক কাজ হত? আমি বলব, এটা তো পাড়ার টিম নয় যে, সিনিয়রকে খেলাতেই হবে। জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে বসে থাকার মধ্যেও কোনও মন খারাপের ব্যাপার নেই। গম্ভীরকে নিয়ে গেলে তাই খেলাতেই হত, তার কোনও মানে নেই। তা ছাড়া শুধুই সিনিয়র ব্যাটসম্যান কেন, গম্ভীর এখন যথেষ্ট ভাল ফর্মেও আছে। দিল্লির রোশনারার মাঠে হরিয়ানা ম্যাচে ও যে দেড়শোটা করেছে সেটা একেবারে সবুজ পিচে। রঞ্জিতে এ মরসুমে ব্যাটিং গড় আশির কাছাকাছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’-র বিরুদ্ধেও সেঞ্চুরি আছে। কেউ কেউ বলতে পারেন, গম্ভীরের মতো আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের কি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে রান দেখে ইন্ডিয়া টিমে ফেরানো হবে? আসল হল, আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য একশো ভাগ কন্ডিশনে থাকাটা। ভাল কথা। তা হলে তুমি ইশান্তকে কী দেখে দলে রাখলে? রঞ্জিতে এক ম্যাচে ন’উইকেট নেওয়াতেই তো?
ইশান্তের জন্য এক নিয়ম, আর গম্ভীরের জন্য আরেকটা এটাই ভাল লাগল না! |