সোমবার সারা দিন চেষ্টা করেও বর্তমান ইস্টবেঙ্গল কোচ ধরতে পারেননি প্রাক্তনকে। ফালোপাকে খুঁজছেন আর্মান্দো।
কেন? আর্মান্দো বলছেন, “ফালোপা ব্রাজিলে। যা অন্য টাইম জোনে। তাই যোগাযোগ করতে পারিনি। মঙ্গলবার চেষ্টা করব।” কিন্তু সব ছেড়েছুড়ে হঠাৎ ফালোপার খোঁজ কেন? ময়দানের প্রথম গোয়ান কোচ বললেন, “আরে, ওঁর দেওয়া দলটা নিয়েই তো ডার্বি জিতলাম। শুভেচ্ছা জানাতে হবে তো!”
ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর গোয়া থেকে আর্মান্দো বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ দুটো। এক, ডার্বি জয়। দুই, ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে আই লিগ নিয়ে আসা। রবিবারের পর লাল-হলুদ সমর্থকদের সেই প্রত্যাশা আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় স্বপ্নটাও কি মরসুম শেষে সফল হবে? আর্মান্দো বলছেন, “ডার্বি জিতে উচ্ছ্বাসে গা ভাসানোর কিছু নেই। এ বার লক্ষ আই লিগ। ফোকাস যেন না নড়ে।”
আর্মান্দো যখন ডার্বি-সাফল্যের আলোয় আই লিগকে পাখির চোখ করছেন, মোহনবাগান কোচ করিম তখন লড়ছেন আলোয় ফেরার জন্য। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় সবুজ-মেরুন কোচ বলছেন, “ভাগ্য খারাপ। তাই সুযোগ তৈরি করেও জেতা গেল না। বুধবারের মহমেডান ম্যাচটা জিতলে ক্ষতে প্রলেপ লাগবে।” |
দুই কাণ্ডারি, দুই লক্ষ্য। |
ডার্বি জয়ের পর রবিবার আর্মান্দোর রাত কেটেছে ঘরোয়া পার্টিতে। অ্যালভিটো, জোয়াকিম, লোবোদের গোয়ান ব্রিগেডের সঙ্গে খানাপিনা করে। সঙ্গে ছিল গোয়া এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁর শুভানুধ্যায়ীদের ফোনালাপ। পার্টি শেষ হয় মাঝরাতে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন মোবাইলে এসএমএসের বন্যা বইছে। ১৪০টা। মিস কলের সংখ্যা ১১০। এ দিন বিকেলে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে এসে বলেন, “হৃদয় ছুয়ে গিয়েছে মেয়ে জেনেভিভের পাঠানো মেসেজটায়।” কী লেখা ছিল সেই বার্তায়? ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, “মেয়ে লিখেছে, সর্বশক্তিমান সব সময় তোমার সঙ্গে রয়েছেন। তুমি জিতবেই।”
সকালে নিয়মমাফিক প্রার্থনার পাশাপাশি নিজের হাতে জামাকাপড় ধোয়াকাচা করেছেন। দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েই ক্লাবে চলে আসেন কর্তাদের সঙ্গে বিশেষ আলোচনার জন্য। সেখানে বলেন, “এখনও অনেক রাস্তা যেতে হবে। লিগ জিততে গেলে খেলার ধরন বদলাতে হবে। আক্রমণের ধার বাড়াতে আরও পাস খেলা চাই। রবিবার অনেক মিসপাস হয়েছে। মাঝমাঠে বলের দখল মাঝেমাঝে হারিয়ে যাচ্ছিল।”
ফোকাস ধরে রাখতে এ দিনই ক্লাবের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে রোজ কথা বলবেন না আর্মান্দো। ডার্বি ম্যাচের গোলদাতা লালরিন্দিকাকেও এ দিন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছিল। কেন? শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “ফুটবল সচিব খেলোয়াড়দের বলেছিলেন জিতে নতুন কোচকে একটা গিফট দিতে। তা হয়ে গিয়েছে। এ বার কথা বন্ধ। দিল্লি বহু দূর। আর ডিকাকে বলা হয়েছে ফের জেতালে কথা বলবে সাংবাদিকদের সঙ্গে। আপাতত খেলায় মন দাও।”
মোহনবাগানে অবশ্য ছবিটা অন্য রকম। এ দিন বিকেলে অনুশীলন ডেকেছিলেন করিম। যদিও কেবল ছিলেন ডার্বিতে খেলা মণীশ এবং শঙ্কর-সহ রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলাররা। সেখানেই প্লেয়ারদের তিনি বলেন, “ডার্বি হারলে সমর্থকদের গালমন্দের অন্ত থাকে না। এ বার কিন্তু তা হয়নি। কারণ আমরা হারার মতো খেলিনি। লম্বা লিগে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।”
ডার্বি-হারের ক্ষতের মধ্যে বুধবারই আই লিগে ফের আর একটা ডার্বি মোহনবাগানের সামনে। প্রতিপক্ষ পেন-নবি-টোলগের মহমেডান। করিম বলছেন, “দেশের সেরা চার বিদেশি ওদের দলে। সঙ্গে নবি-ইসফাকদের মতো আইএমজি-আর ফেরত কয়েক জন ভাল ফুটবলার রয়েছে। সুতরাং লড়াই শক্ত।” তবে মোহনবাগানের পক্ষে আশার আলো এই ম্যাচে চার বিদেশিকেই পাওয়া যাবে। করিম বলছেন, “ওডাফাকে ফিট করে গোলের মধ্যে ফেরানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। তবে মরসুমে প্রথম বার চার বিদেশিকে একসঙ্গে পাচ্ছি। রক্ষণ সাজাতে বিকল্প বাড়ল। ভাল লক্ষণ।” |