মানসপুত্র লালরিন্দিকা রালতেকে এখনই অভিনন্দন জানিয়ে মাথা ঘুরিয়ে দিতে রাজি নন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। বরং পুরনো ছাত্রের আরও কিছু গোল করা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে চান।
“আমি এ সপ্তাহেই ওকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানাব। তবে শুনেছি বৃহস্পতিবার ওদের একটা ম্যাচ আছে। চাই সেই ম্যাচেও ও গোল করুক। তার পরেই ফোন করব,” অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে ই-মেলে এ ভাবেই তাঁর মনোভাব জানিয়ে দিলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ মর্গ্যান।
যে-হেতু ব্রিটিশ কোচই তাঁকে লাল-হলুদে ‘জন্ম’ দিয়েছেন, তৈরি করেছেন হাতে ধরে, সে জন্যই রবিবার ডার্বিতে বিশ্বমানের গোল করার পর ডিকারও ইচ্ছে ছিল ‘মর্গ্যান স্যার’-কে ফোন করার। রাত পর্যন্ত নম্বর জোগাড়ের চেষ্টাও করেছিলেন। বললেন, “মর্গ্যান স্যারের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই, তাই স্যারকে খুশির খবরটা নিজের মুখে দিতে পারলাম না।”
মর্গ্যানের মতো ইস্টবেঙ্গল কর্তারাও তাঁদের ‘ফিনিক্স পাখি’কে নিয়ে মিডিয়ায় বেশি হইচই চাইছেন না। দুর্দান্ত গোল করে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জেতানোর পরেও তাই ডিকার কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে লাল-হলুদ শিবির। ডিকাও সারা দিন প্রকাশ্যে দেখা দেননি। পরিচিতদেরও ফোন ধরেননি। তবে বিকেলের পর সল্টলেকের এক শপিং মলে গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতে।
ডিকা ক্লাবের নির্দেশে ‘লুকিয়ে’ পড়লেও তাঁর দূরপাল্লার শটে গোল করার ট্রেডমার্ক কোথা থেকে এল সেই রহস্য এ দিন অবশ্য ফাঁস করে দিয়েছেন তাঁর ‘গডফাদার’ তুলুঙ্গা। যিনি আবার এখন ডিকার সঙ্গে একই টিমে খেলছেন। “প্রতিদিন ডিকাকে আমি অনুশীলন বা ম্যাচের আগে বলি, তোর বাঁ পায়ে দারুণ শট আছে। সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা কর। যখনই সুযোগ পাবি দূর থেকে শট মেরে গোল করার চেষ্টা করবি,” বলছিলেন তুলুঙ্গা। ডিকাকে কি রবিবার ডার্বির আগেও এ কথা বলেছিলেন? তুলুঙ্গা বলেন, “অবশ্যই বলেছিলাম। হাফটাইমে সময় বারবার মনে করিয়ে দিয়েছিলাম সুযোগ পেলেই মারবি। গোল করে এসে ও ড্রেসিংরুমে ঢুকে বলল, দু’বার চেষ্টা করেছি। একটা হয়ে গেল।” |
লাল-হলুদের চালকের আসনে এখন লালরিন্দিকা। সোমবার। ছবি: উৎপল সরকার। |
ক্লাব প্র্যাকটিসের বাইরেও যে এই রকম শট নিয়মিত অনুশীলন করেন ডিকা, সেটাও জানালেন তুলুঙ্গা। বলছিলেন, “আমরা দু’জনে মাঝেমধ্যে সল্টলেকের মাঠে অনুশীলন করি। নিজেদের ফিট রাখার জন্য। সেখানেও ডিকা এই শটটা প্র্যাকটিস করে।”
সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হল ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশে ডিকা সুযোগ পেয়েছেন তুলুঙ্গার জায়গাতেই। তাতে অবশ্য একেবারেই অখুশি নন ইস্টবেঙ্গলের আরেক মিডিও। বললেন, “এটা তো খুব আনন্দের ব্যাপার যে, ও আমার জায়গায় খেলছে। আমি ডান দিক-বাঁ দিক দু’দিকেই খেলতে পারি। ডিকা বেশির ভাগ সময় খেলে বাঁ দিকে। ভারতীয় দলেও আমরা একসঙ্গে খেলেছি। ও তো সব সময় আমার রুমমেট হয়।”
ডার্বি ম্যাচের নায়ক লালরিন্দিকাকে নিয়ে ময়দানে তোলপাড়ের পাশাপাশি আর্মান্দো কোলাসোর টিমের জন্য খারাপ খবর আছে। চোটের জন্য বৃহস্পতিবার ইউনাইটেড স্পোর্টসের বিরুদ্ধে আই লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে পারবেন না মেহতাব। ডার্বি ম্যাচে হাঁটুর পাশে চোট পান। ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা গিয়েছে, হাড়ে চোট লেগেছে। সারতে পাঁচ-সাত দিন লাগবে। ইস্টবেঙ্গলের সহ-সচিব ডাক্তার শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বললেন, “মেহতাবের চোট খুব গুরুতর না হলেও সারতে সপ্তাহখানেক লাগবে। সে জন্য পরের ম্যাচ খেলতে পারবে না।’’ |