|
|
|
|
মোদী-মোকাবিলায় মরিয়া নীতীশ সংখ্যালঘুদের পাশে
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
তাঁর লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন। আর সেগিকে চোখ রেখেই তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের অষ্টম বর্ষপূর্তিতে সরকারের কাজকর্মের রিপোর্ট কার্ড পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের দিকে বিশেষ নজর দিলেন। বিহারে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর মোকাবিলায় ফের ভাগলপুর দাঙ্গার ঘটনাকে সামনে নিয়ে এলেন তিনি। প্রায় আড়াই দশক আগের ভাগলপুরের ঘটনায় নিহত ১০০০ ও নিখোঁজ ৫০ হাজার মানুষের পরিবারের জন্য যে পেনশন ব্যবস্থা তিনি চালু করেছিলেন, তার পরিমাণ এক ধাক্কায় ৪০ শতাংশেরও বেশি বাড়িয়ে দিলেন। উল্লেখ্য, ভাগলপুর দাঙ্গায় নিহত ও নিখোঁজ মানুষগুলির ৯০ ভাগই সংখ্যালঘু মুসলিম।
১৯৮৯-এ র ভাগলপুর দাঙ্গার বন্ধ হয়ে যাওয়া মামলা ক্ষমতায় এসে চালু করেন নীতীশ। বেশ কিছু দোষীকে শেষ পর্যন্ত শাস্তিও দেয় আদালত। এই ঘটনায় নিহত হাজার খানেক মানুষকে শড়াক্ত করে তাঁদের পরিবারের জন্য মাসিক ৩৫০০ টাকা করে পেনশন চালু করে নীতীশ সরকার। এই ঘটনায় নিখোঁজ হয় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। তাঁদের পরিবারকেও নীতীশ সরকার এই পেনশনের আওতায় নিয়ে আসে। আজ অষ্টম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে নীতীশ পেনশনের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছেন।
লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ভোটকে এক কাট্টা করে নিজের দিকে টানতে নীতীশের এটা মোক্ষম চাল বলে মনে করছে বিহার রাজনীতির কুশীলবরা। একই সঙ্গে আরজেডি-র সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কেও নীতীশের এই সিদ্ধান্ত বড়সড় ভাঙন ধরাবে বলে তাঁরা মনে করেন।
এরই পাশাপাশি, সংখ্যালঘু পরিবারের স্কুলছুট বাচ্চাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্যও নীতীশ সরকার বিশেষ কিছু পদক্ষেপ আগেই নিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে কিছু অস্থায়ী নিয়োগও সরকার করেছিল। তারা মাসিক ৩৫০০ টাকার একটি ভাতা পান। সেই ভাতাও বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংখ্যালঘু মানুষদের মন পাওয়ার বিষয়টি যে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়ে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “শুধু অর্থ দিয়ে এর গুরুত্ব বিচার করলে হবে না। সংখ্যালঘুদের জন্য তো সরকারকে ভাবতে হবে। এ ছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টিতেও জোর দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, জাতি সংঘর্ষ ঝেড়ে ফেলে রাজ্যের মানুষ এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করছেন। সেই পরিস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা হবে বলে আমাদের আশঙ্কা। কিন্তু রাজ্যের মানুষই তা রুখবে।”
গত বছর ১৫ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন বিদ্যুতের উন্নতি করতে না পারলে তিনি পরের নির্বাচনে ভোট চাইতে যাবেন না। আজ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে রাজ্যে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হত। গত বছরে উৎপাদন বেড়ে হয়েছিল ১২০০ মেগাওয়াট।
রাজ্যের উন্নয়নের কাজে ক’দিন আগেও তাঁর সঙ্গে ছিল বিজেপি। রিপোর্ট কার্ডে যে কৃতিত্ব নীতীশ দাবি করেছেন তার ভাগ তো বিজেপি-রও প্রাপ্য?—এই প্রশ্নের জবাবে নীতীশ বলেন, “এখানে কৃতিত্বের প্রশ্ন নেই। সকলে মিলে কাজ করছেন।” তাঁর বক্তব্য, “সরকার চালাতে গিয়ে যখন বাইরের লোকজন হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে তখনই ঠিক করি, বিজেপির সঙ্গ না ছাড়লে এ থেকে মুক্তি নেই।” তাঁর কথায়, “বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে আমরা ঝুঁকি নিয়েছি। নীতি এবং আদর্শের প্রশ্নে আপস করিনি।” |
|
|
|
|
|