অবশেষে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি আপাতত ছ’মাস স্থগিত রাখতে রাজি হল অর্থনৈতিক অবরোধে জেরবার ইরান। আমেরিকা-সহ উন্নত দুনিয়ার ৬টি রাষ্ট্রের সঙ্গে এই ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তিতে সই করেছে ইরান। আর তারই জেরে অশোধিত তেলের দাম কমার প্রভাবে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সোমবার সেনসেক্স বেড়ে যায় ৩৮৮ পয়েন্ট। কাটে তিন দিনের খরা। ভারতীয় টাকাও এক ধাক্কায় বেড়েছে ৩৭ পয়সা। ফলে দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬২.৫০ টাকা।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার গভীর রাতে এই চুক্তিতে ইরান সই করে। যার আওতায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন বন্ধ রাখবে ইরান। বিনিময়ে অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল হওয়ার প্রভাবে অন্তত ৭০০ কোটি ডলার (প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা) আন্তর্জাতিক সাহায্য পাবে ইরান। শীঘ্রই উঠে যাবে ইরানের উপর তেল রফতানি নিয়ে নিষেধাজ্ঞাও।
ইরান পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ রাখায় লগ্নিকারীদের শেয়ার কেনার আগ্রহ বাড়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলি হল:
• নেমে আসবে ভারতের তেল আমদনির খরচ
• কমবে চলতি খাতে মুদ্রা লেনদেন ঘাটতি
• মূল্যবৃদ্ধির হারে রাশ টানাও সম্ভব হবে
চুক্তির প্রভাবে স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ব বাজারে পড়ে যায় তেলের দাম। ইরান রফতানির অনুমতি পেলে তেলের জোগানের সঙ্কট কাটবে বলেই শিল্পমহলের আশা। যে কারণে মার্কিন বাজারে অশোধিত তেলের দাম প্রায় ২% কমে সোমবার নেমে আসে ব্যারেলে ৯৩.৮২ ডলারে। লন্ডনের ব্রেন্টের দাম কমে দাঁড়ায় ১০৮.৫৪ ডলার।
এর প্রভাবই এসে পড়ে বাজারে। সোমবার এশিয়া ও ইউরোপের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকে ভারতীয় বাজার। প্রসঙ্গত, তেলের প্রয়োজনের ৮০ শতাংশই আমদানি করে মেটায় ভারত। সোমবার সেনসেক্স ও নিফটি, দু’টি সূচকই বেড়েছে প্রায় ২% করে। সেনসেক্স ৩৮৮ পয়েন্ট বেড়ে বন্ধ হয় ২০,৬০৫ পয়েন্টে। পাশাপাশি নিফটি প্রায় ১২০ পয়েন্ট বেড়ে ছুঁয়েছে ৬১১৫.৩৫ অঙ্ক। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির শেয়ার দরই বেড়েছে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৭% পর্যন্ত। এর মধ্যে এইচপিসিএল বেড়েছে ৬.৯৪%, বিপিসিএল ৫.৫৭%, ইন্ডিয়ান অয়েল ৩.৩৮%।
|