রাজারহাটের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জ্যাংড়া আদর্শ বিদ্যামন্দিরে শুক্রবার, উপনির্বাচনের দিন দেখা গিয়েছিল স্কুলের প্রধান লোহার দরজা হাট করে খোলা। পুলিশি প্রহরা উপেক্ষা করে, ভোটার কার্ড না দেখিয়েই যে কেউ ঢুকে পড়ছিলেন। রবিবার, পুনর্নির্বাচনের দিন সেখানেই ঠিক উল্টো ছবি। একটি মাত্র লোহার গেটের পাল্লা খোলা। ওই সামান্য খোলা অংশের সামনে দাঁড়িয়ে চার-পাঁচ জন
পুলিশ অফিসার। ভোটার কার্ড দেখালে তবেই মিলছে ভিতরে ঢোকার অনুমতি। জ্যাংড়া আদর্শ বিদ্যামন্দির ও জনকল্যাণ সমিতি রাজারহাটের এই দুই বুথে শুক্রবার অভিযোগ উঠেছিল, মোট ভোটারের থেকে বেশি ভোট পড়েছে। সে কারণেই ওই ওয়ার্ডের এই দুই বুথে রবিবার পুনর্নির্বাচন হল। পুনর্নির্বাচন হয়েছে হাওড়ার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথেও। এ দিনের ভোট ঘিরে অবশ্য কোনও গোলমাল বা অশান্তি হয়নি।
বহিরাগতদের আটকাতে রবিবার সকাল থেকেই রাজারহাটের দু’টি বুথকেন্দ্রে পুলিশি তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। সকাল থেকেই দুই বুথে ছিলেন বিধাননগর কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ কর্তারা। জ্যাংড়া আদর্শ বিদ্যামন্দিরে ভোট চলাকালীন পরিস্থিতি দেখতে এসেছিলেন মহকুমা শাসক থেকে শুরু করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, এমনকী ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটও। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় কোনও জমায়েত করতে দেওয়া হয়নি। নিয়ন্ত্রণ ছিল গাড়ি এবং অটো যাতায়াতে।
বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কোনও অশান্তির খবর নেই।” তৃণমূল এবং সিপিএমের পক্ষ থেকেও কোনও অভিযোগ করা হয়নি বলে খবর। রাজারহাটে দু’টি বুথ মিলিয়ে ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। হাওড়ার ৪৪ নম্বর
ওয়ার্ডের একটি বুথে ভোট পড়েছে ৬৪ শতাংশ। সেখানেও শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
|
পুনর্নির্বাচন নির্বিঘ্নে, ৫ পুরসভার ফল আজ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের জয়ের ধারা কতদূর বজায় থাকে, উত্তর মিলবে আজ, সোমবার। রাজ্যের পাঁচটি পুর বোর্ডের ভোট এবং ২৩টি পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডে উপনির্বাচনের ফল জানা যাবে আজ। ত্রিস্তর নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং সিসিটিভি-র নজরদারিতে ভোট গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। পঞ্চায়েত ও গত সেপ্টেম্বরে ১২টি পুরসভার ভোটের দু’মাসের মাথায় ফের কিছু শহর ও মফস্সলের জনমত যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে দলগুলি। হাওড়া, বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম এই পাঁচটি পুরসভার ভোট হয়েছিল শুক্রবার। একই সঙ্গে ওই দিন উপনির্বাচন হয়েছিল কলকাতা, বিধাননগর, রাজারহাট-গোপালপুর-সহ আরও ২৩টি পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডে। একই রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এ দিন ওই ২৯টি ওয়ার্ডেরও ভোট গণনা হবে। বুথ দখল-সহ গুচ্ছ অভিযোগে ৬টি বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ওই ৬টি বুথে রবিবার পুনর্নির্বাচন হয়েছে নির্বিঘ্নে। কমিশনের বক্তব্য, হাওড়ার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বুথে ভোট পড়েছে ৬৪.৬৪%। কৃষ্ণনগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বুথে ৮০.৪৬% এবং রাজারহাট-গোপালপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১,২, ৭ এবং ৮ নম্বর বুথে ভোট পড়েছে ৫১%-এর সামান্য কিছু বেশি। পাঁচটি পুরসভার মোট ১৪৫টি ওয়ার্ডে লড়াইয়ে আছেন ৭৮৫ জন। আর ২৯টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ১১৫ জন। পাঁচটি পুরসভার মধ্যে হাওড়া ও ঝাড়গ্রাম ছিল বামেদের দখলে। দু’টিতেই ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। হাওড়াতে ভোটের দিন আক্রান্ত হন বিদায়ী মেয়র মমতা জায়সবাল। কৃষ্ণনগরে ভোটের আগেই কংগ্রেস কাউন্সিলরদের দলে টেনে বোর্ডের দখল নিয়েছিল তৃণমূল। তা তাদেরই হাতে আসবে, আশা তৃণমূলের। বহরমপুরে তৃণমূল ঘাসফুল ফোটাতে পারে কি না, জানা যাবে আজ। মেদিনীপুর পুরসভা আগে ছিল কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের। এ বার তারা আলাদা লড়েছে।
পুরনো খবর: হাওড়া-সল্টলেক উত্তপ্ত, পুরভোট অন্যত্র শান্তিতেই |