ঘোড়া বিদ্রোহী হওয়ার পরে আস্তাবলে আগল দিতে চাইল কংগ্রেস!
তৃণমূলে যোগ দিতে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে দল-বিরোধী কার্যকলাপের দায়ে শান্তিপুরের বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেস সহ-সভাপতি অজয় দে-কে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য রবিবার বলেছেন, “শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ও বিধায়ক অজয় দে বেশ কিছু দিন ধরেই দল ভাঙার খেলায় লিপ্ত আছেন। এই অভিযোগেই তিনি সাসপেন্ড হয়েছেন।” অজয়বাবুর অবশ্য আজ, সোমবারই লোকলস্কর নিয়ে শান্তিপুর থেকে তৃণমূল ভবনে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দেওয়ার কথা। তবে অজয়বাবুর বিধায়ক-পদ ছাড়া এবং শান্তিপুরে উপনির্বাচন ছাড়া আর কোনও গত্যন্তর থাকছে না। অজয়বাবু দল ছাড়লে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা নেমে আসবে ৩৯-এ। একক ভাবে যা সিপিএমের সমান।
অজয়বাবু অবশ্য সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে আমল দিতে চাননি। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ঘরে বসে সাসপেন্ড করতে থাকলে প্যাডের পাতা ফুরিয়ে যাবে! এতেই বোঝা যাচ্ছে, মানুষের পাশে থেকে আন্দোলন এই দলে করা যাবে না!” অজয়বাবুর সঙ্গেই শান্তিপুর পুরসভার গোটা বোর্ডই দল বদলাবে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য।
শান্তিপুরের আগে এ দিনই উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ এবং হাওড়ার জগৎবল্লভপুরেও কংগ্রেসের ঘর ভাঙিয়েছে তৃণমূল। বনগাঁ পুরসভার ভাইস-চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা রায়-সহ কংগ্রেসের পাঁচ কাউন্সিলর এবং জগৎবল্লভপুরের ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তুষার সরকার যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। দল ভাঙানোর এই খেলা আটকাতে কেন্দ্রের মাধ্যমে পাল্টা চাপের কৌশল নিতে চাইছে কংগ্রেসও। ‘দলবদলু’ পুরবোর্ডগুলির কাজে অনিয়ম খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে আবেদন করছে তারা।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপবাবুর বক্তব্য, “তৃণমূলের সরকার কংগ্রেস বা অন্য দলের পরিচালিত পুরসভাগুলির টাকা আটকে দিয়ে গলায় পা দিয়ে মারার চেষ্টা করছে! উন্নয়নের টাকা নিয়ে এ জিনিস করা যায় না!” শীঘ্রই দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবেন প্রদীপবাবু। বদলে-যাওয়া পুরবোর্ডগুলির কাজে অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তদন্তেরও আর্জি জানাবেন।
বনগাঁর ২২ আসনের পুরসভায় এত দিন কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ বোর্ড ছিল তৃণমূলের। নিজেদের ৭ জনের পাশাপাশি কংগ্রেসের ৫ কাউন্সিলরের সমর্থনে চলছিল পুরসভা। এ বার কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরা তৃণমূলে আসায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল রাজ্যের শাসক দলই। |