পাত্রের বয়স ১৫ বছর। পাত্রীর ১৪। বিয়ে হওয়ার কথা ছিল রবিবার। কিন্তু তা মেনে নিতে পারেনি পাত্রীর সহপাঠিনীরা। মরিয়া হয়ে তারা খবর দেয় পুলিশে। বন্ধ হয় বিয়ে। বাসন্তীর ২ নম্বর রানিগড় এলাকার ঘটনা। নাবালিকার পড়াশোনার আগ্রহ দেখে তার পড়ার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ। ওই নাবালক ভুল বুঝতে পারার কথা স্বীকার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগড়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাবা যক্ষ্মা রোগে ভুগছেন। বাইরে থাকেন। মা পরিচারিকার কাজ করেন। দম্পতির সাত সন্তানের মধ্যে ওই বালিকা চতুর্থ। এ দিন দুপুরে ওই বালিকার সঙ্গে বাসন্তীর জ্যোতিকাপুরের বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই কিশোরের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিশোরের বাবা ভ্যান-চালক। মা পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ওই বালকই বড়। সে মুম্বইয়ে জরির কাজ করে।
বিয়ের সব প্রস্তুতি যখন সারা, তখনই বাসন্তী থানায় ফোন করে তা আটকানোর অনুরোধ করে নাবালিকার সহপাঠিনীরা। নাবালিকার বাড়িতে পৌঁছে যান ওসি কৌশিক কুণ্ডু। তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। একটি গাড়ি পাঠানো হয় কিশোরের বাড়িতে। তাকে ও তার বাবা-মাকেও থানায় আনা হয়। এর পরে দু’পক্ষকে বসিয়ে বিয়ে দেওয়া থেকে নিরস্ত করে পুলিশ।
নাবালিকার মায়ের বক্তব্য, “অভাবের সংসার। ওর বাবা বাইরে থাকেন। সাত ছেলেমেয়েকে নিয়ে আমি একা থাকি। আমার মেয়ে বড় হচ্ছে। পাত্রের সন্ধান পেয়ে মনে হয়েছিল, এমন সুযোগ ছাড়া উচিত হবে না।” নাবালিকা বলে, “আমার বিয়ে করার তেমন ইচ্ছে ছিল না। পড়তেই চেয়েছিলাম। কিন্তু সংসারের অভাবের কথা ভেবেই রাজি হয়ে যাই।” থানায় বসে ওই কিশোর বলে, “আমি বাইরে থাকি। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলাম। বাড়ির লোক বিয়ে করতে অনুরোধ করায় না করতে পারিনি। এখন বুঝতে পারছি, ভুল করেছিলাম।” ওসি জানান, ওই নাবালিকা পড়তে চায়। কিন্তু ওদের সেই সামর্থ্য নেই। তাই নাবালিকার পড়াশোনার দায়িত্ব পুলিশ নিয়েছে। |