দিঘা সৈকতে একদল কিশোরী তন্নতন্ন করে খুঁজে চলেছে লাল কাঁকড়ার গর্ত, সৈকত লাগোয়া বালুয়াড়িতে ভূমিক্ষয়-রোধকারী উদ্ভিদ। আবার কখনও বালি আর সাগরের জল নিয়ে করছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বুধ-বৃহস্পতি ও শুক্রএই তিন দিন চেনাবৃত্তের বাইরে অন্য ছবি দেখল সৈকত শহর।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের সহযোগিতায় দিঘার সৈকতে ‘উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের উপর আধুনিক নগরোন্নয়নের প্রভাব’ এই বিষয়ে ছাত্রীদের হাতে-কলমে বাস্তব অবস্থা দেখাতে তিন দিনের এক কর্মশালার আয়োজন করেছিল দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র। সেখানে চার স্কুল শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে যোগ দিয়েছিল লরেটোর নবম শ্রেণির ৭০ জন ছাত্রী। |
চলছে সমীক্ষার কাজ। দিঘা সৈকতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
হাতে-কলমে উপকূলের বাস্তুতন্ত্র বোঝাতে ছাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অমলেশ চৌধুরী, রাজ্য জীব বৈচিত্র্য পর্ষদের বিজ্ঞানী অনির্বান রায়, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের সহকারী অধ্যাপক ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী পুণ্যশ্লোক ভাদুড়ি, দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটার শুভশঙ্কর ঘোষ, এডুকেশন অফিসার পার্থসারথি সাহা ও রিসার্চ ফেলো সুমিত মান্না।
বিজ্ঞানীদের সংস্পর্শে হাতেকলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে ছাত্রীরাই চমকে উঠেছে উপকূলের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষয়িষ্ণু চেহারা দেখে। গোটা দিঘা জুড়ে সৈকতের কত কাছে কে হোটেল-রিসর্ট গড়ে তুলবে তাই নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা, সৈকতের ধারে সমুদ্র ভাঙন ঠেকানোর নামে সরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠছে কংক্রিটের পাঁচিল। পর্যটক বিনোদনের নামে সৈকতের উপর দিয়ে চলছে যথেচ্ছ মোটরযান। গোটা দিঘা সৈকত কেন্দ্রের হোটেল লজ-সহ স্থানীয় জনবসতির যাবতীয় বর্জ্য আবর্জনা আর নোংরা জল নির্বিচারে ফেলা হচ্ছে সৈকতে। এর জেরে সৈকত থেকে বিলুপ্ত হতে বসেছে সৈকতে বিচরণকারী লাল-কাকঁড়ার প্রজাতি, ভূমিক্ষয়-রোধকারী উদ্ভিদ। তিন দিনের কর্মাশালা শেষে শুক্রবার ছাত্রীরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে তাদের অভিজ্ঞতা দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে উপস্থাপন করে। |