বোন ও বৌদিকে কটূক্তির প্রতিবাদ করায় এক যুবককে মারধর করে মাথায় কোদালের কোপ বসিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল গোঘাটের শ্যাওড়া গ্রামের সিংহপাড়ার আট জনের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালের ঘটনা। গুরুতর জখম বছর ত্রিশের ওই যুবককে প্রথমে আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।
ওই ঘটনায় পুলিশ প্রসেনজিৎ দলুই এবং জগন্নাথ দলুই নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি ছয় অভিযুক্ত পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আরামবাগ হাসপাতালে আহতকে দেখতে এসে গোঘাটের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বলেন, “দোষীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
ওই গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ, প্রায়ই মাঠেঘাটে তাঁদের উত্ত্যক্ত করছিল গ্রামেরই নিমাই দলুইয়ের তিন ছেলে প্রসেনজিৎ, মৃত্যুঞ্জয়, বাবলু এবং তাদের বন্ধু জগন্নাথ দলুই-সহ কয়েক জন। চলত অশালীন আচরণ এবং কটূক্তিও। প্রতিবাদ করে লাভ হত না। এ দিনের ঘটনায় আহত যুবকের বোন ও বৌদি গত বুধবার পুকুর ঘাটে স্নান করতে গেলে প্রসেনজিৎ, জগন্নাথরা তাঁদের লক্ষ করে অশালীন মন্তব্য করে বলে অভিযোগ। আহতের বোন ও বৌদি স্নান না করেই বাড়ি ফিরে এসে ঘটনার কথা জানান পরিবারের লোকজনকে। ওই যুবক সে দিনই প্রসেনজিতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা নিমাই দলুইকে ছেলের ‘কীর্তি’র কথা বলেন। ছেলের পক্ষ নিয়ে নিমাইবাবু ওই যুবককেই হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। আবার তারই জেরে গত শুক্রবার ওই যুবকের খুড়তুতো দাদাকে রাস্তায় মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সে দিনই ওই পরিবারের পক্ষ থেকে নিমাই, প্রসেনজিৎ, জগন্নাথ-সহ আট জনের বিরুদ্ধে থানায় জেনারেল ডায়েরি করা হয়।
আহতের বড়দা বলেন, “পুলিশে জানানোর পর থেকেই অভিযুক্তেরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিল। এ দিন ওরা খুনের চেষ্টা করল ভাইকে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে যুবক এ দিন আহত হন, তিনি সকালে গ্রামে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে একটি মাটির রাস্তা তৈরির কাজ করতে যান। ওই প্রকল্পে কাজ করছিলেন নিমাই, প্রসেনজিৎ, জগন্নাথরাও। হঠাৎই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। প্রসেনজিৎ, জগন্নাথরা ওই যুবককে বেড়ধক মারতে থাকেন এবং তার মধ্যেই নিমাই তাঁর মাথায় কোদালের কোপ মারেন বলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শ্রমিকেরাই প্রসেনজিৎ এবং জগন্নাথকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পালিয়ে যায় নিমাই-সহ বাকি অভিযুক্তেরা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ওই প্রকল্পের সুপারভাইজার উজ্জ্বল দলুই এবং যতীন দলুই বলেন, “মহিলাদের কটূক্তি করা নিয়ে ওই যুবকের সঙ্গে নিমাইদের বচসা হচ্ছিল। বচসা বন্ধ করে কাজে মন দিতে বলি। আচমকা দেখি, রক্তারক্তি কাণ্ড।” |