ভবন নেই, সঙ্কটে অঙ্গনওয়াড়ি
মাটি দিয়ে তৈরি ঝকঝকে উঠোন। তার উপরে ছোট বস্তা বা প্লাস্টিকের টুকরো পেতে বসে শীতের আমেজ জড়ানো সকালের রোদে পিঠ দিয়ে কতগুলি খুদে ছড়া বলায় ব্যস্ত। সামনে দিদিমনি বসে। আবার দিদিমনির সামনেই একটি ওজন মাপার যন্ত্র। পাশেই রান্না হচ্ছে খিচুড়ি। নভেম্বর মাসের সকালে হঠাৎ পারুলিয়া পঞ্চায়েতের সিমলাকুঁড়ি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গেলে মনে হবে আহা কী সুন্দর পরিবেশ। আর সেটা মনে হলেই ভুল হবে।
কারণ, প্রশাসনের হিসেবে দুবরাজপুর ব্লকের মোট ২৫০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি কেন্দ্রের স্থায়ী ঘর নেই। সিমলাকুঁড়ি কেন্দ্রটি সেগুলির একটি। বর্তমানে কেন্দ্রটি চলে ওই পঞ্চায়েত এলাকার রাজগঞ্জ গ্রামের পূর্ণিমা বাগদি নামে এক মহিলার বাড়ির দাওয়ায়। স্বাভাবিক ভাবে সমস্যা তো হবেই। তাই পূর্ণিমাদেবী ওই কেন্দ্রের কর্মীকে জানিয়ে দিয়েছেন, এ ভাবে তাঁর বাড়ির দাওয়ায় কেন্দ্রটি চালানো যাবে না।

সিমলাকুঁড়িতে অস্থায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার পাশেই চলছে ক্লাস। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
তা হলে, এরপর কোথায় চলবে কেন্দ্রটি? সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই। ফলে পরিবর্ত জায়গা না পেলে ডিসেম্বরের দিন কয়েক চলার পরই অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে সিমলাকুঁড়ি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। বিষয়টি অবশ্য লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছেন কেন্দ্রটির কর্মী কৃষ্ণা রায় সরকার। তবে চটজলদি সমাধান মিলবে তেমন কোনও ইঙ্গিত অবশ্য নেই। কর্মী কৃষ্ণা রায় সরকার বলেন, “কাগজে কলমে ২০১১ সালের জুন মাসে রাজগঞ্জ গ্রামের গোয়ালাপাড়া, বাউড়িপাড়া, বাগদিপাড়া ও কোঁড়াপাড়াকে নিয়ে সিমলাকুঁড়ি মৌজায় এই কেন্দ্রটি গঠিত হয়। প্রথম দিন থেকেই না আছে নির্দিষ্ট জায়গা, না আছে কেন্দ্রের জন্য স্থায়ী ঘর। এর আগে গ্রামের একটি জীর্ণ চালাঘরে কেন্দ্রটি চলত। পরে সেটি ভেঙে পাড়ার উপক্রম হতে সেখান থেকে পূর্ণিমাদেবীর বাড়ির উঠোনে উঠে আসতে হয়েছে। মধ্যবর্তী সময়ও ৪০ দিন কেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম। এ বারও সেই পরিস্থিতি। কী করব বুঝতে পারছি না।” তাঁর ক্ষোভ, “এমনিতেই শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় প্রসূতি, গর্ভবতী ও শিশু মিলিয়ে ৭০-৭২ জনের রান্না খোলা জায়গায় করা সমস্যার। সহায়িকাও নেই। গ্রামেরই একজন সামান্য পয়সার বিনিময়ে আমাকে কিছুটা সাহায্য করে থাকেন। এ বার মজুত থাকা চাল, ডাল ফুরোলেই রান্না বন্ধ করে দিতে হবে।”
শুধু কর্মী নন। ওই কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল স্থানীয় বাসিন্দা দীপালি পাতর, সন্ধ্যা পাতর, সীমা বাউড়ি, মিনতি সূত্রধররাও। তাঁরা বলছেন, স্থায়ী ঘর না থাকলে সমস্যা থাকবেই। দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ব্লকের যতগুলি কেন্দ্রের স্থায়ী ঘর নেই, পঞ্চায়েত সমিতির প্রস্তাব মেনে সেগুলি ধাপে ধাপে করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। কিছু কেন্দ্র ১০০ দিন প্রকল্পের আওতায় তৈরি হবে। বর্তমানে ‘এমএসডিপি’ প্রকল্পের আওতায় ১৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর তৈরি হচ্ছে। এগুলির মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতি সিমলাকুঁড়ি কেন্দ্রটির নাম দিয়েছে কি না বলতে পারছি না। জেনে বলতে হবে।” তবে একটি জমি চহ্নিত করে চার দাগ নম্বর ও খতিয়ান নম্বর সবে ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছে বলে পঞ্চায়েত সূত্র জানা গিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.