মূর্তি চোর ধরতে সিআইডি-র দ্বারস্থ হল পুলিশ।
বর্ধমানের কেতুগ্রামের নানা এলাকায় পরপর মন্দিরে চুরির ঘটনার বেশ কয়েক মাস পরেও তদন্তে অন্ধকারে পুলিশ। শেষে সিআইডি-র বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চায় তারা। সিআইডি চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তাদের বর্ধমান জেলা দফতর এ ব্যাপারে সাহায্য করবে। এক সিআইডি কর্তা বলেন, “মামলার নথিপত্র কেতু্গ্রাম থানায় থাকবে। আমরা তদন্তে সাহায্য করব। বলা যায়,
জেলা পুলিশ এবং সিআইডি এক সঙ্গে তদন্ত করবে।”
গত ২২ জুন কেতুগ্রামের নিরোল গ্রামে গুপ্ত পরিবারে কামাখ্যা মন্দিরের তালা ভেঙে চুরি যায় তিনশো বছরের পুরনো অষ্টধাতুর মূর্তি। দেবীর গয়না ও কষ্টি পাথরের শালগ্রাম শিলাও খোয়া যায়। ৪ জুলাই নিরোলের পাশে দক্ষিণডিহির অট্টহাস আশ্রমের মন্দিরে গর্ভগৃহ থেকে একই কায়দায় চুরি
যায় অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তি। এর পরপরই সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বড় পুরুলিয়া গ্রামে একটি
মন্দিরে চুরি হয়। এ সবের আগে আমগোড়িয়া ও মৌগ্রামেও মন্দির থেকে মূর্তি চুরি গিয়েছিল। কোনও ঘটনারই এখনও পর্যন্ত কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
অট্টহাস ও নিরোলে চুরির পরেই সিআইডি-র বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি, হাতের ছাপ সংগ্রহ করেন। অট্টহাসে কুকুর নিয়ে গিয়ে তদন্ত করেও পুলিশ কোনও সূত্র পায়নি। মাঝে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য তদন্তে কিছুটা ভাটা পড়ে। ভোট মিটলে জোরকদমে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিল পুলিশ। তার পরেও কেটে গিয়েছে প্রায় চার মাস। কিনারা অধরাই।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কেতুগ্রাম থানা ২৪ জনকে জেরা করেও কোনও সূত্র পায়নি। মূর্তিগুলি এলাকায় রয়েছে না পাচার হয়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারেও পুলিশ অন্ধকারে। জেলার এক পুলিশকর্তার দাবি, “মূর্তি উদ্ধার বা চোরেদের ধরতে আমরা গ্রামবাসী তো বটেই, পরিবারের থেকেও তেমন সাহায্য পাইনি। এ সব ক্ষেত্রে পারিবারিক দ্বন্দ্বও কাজ করে বলে আমাদের অনুমান।” গুপ্ত পরিবারের সদস্যেরা থেকে এলাকার মানুষজন, সকলেরই আবার ক্ষোভ, পুলিশ বেশ কয়েক বার কথাবার্তা বলে গেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
১২ সেপ্টেম্বর কেতুগ্রামের আইসি আব্দুর গফ্ফর সিআইডি-কে চিঠি দিয়ে মূর্তি চুরির কিনারার দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন। সিআইডি-তে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞেরা থাকায় দ্রুত কিনারা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পরে সিআইডি-র দাবি মতো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ, বিগ্রহের ছবি-সহ তদন্তকারী অফিসারের মন্তব্য তাদের কাছে পাঠায় পুলিশ। ১৩ নভেম্বর সিআইডি চিঠি দিয়ে জানায়, সরাসরি তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে নয়, পুলিশকে সাহায্য করবে তারা।
এর পরেও লুটেরার দল ধরা পড়ে কি না, তা-ই এখন দেখার। |