|
|
|
|
ডিক্টাফোন বন্ধ করে
স্টোরির পিছনেও নানা রকম ঘটনা ঘটে। কখনও তা হয় খুব দুঃখের।
কখনও মজার লিখছেন লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
|
দয়া করে যদি জিগোলোদের ডেরার নম্বরটা দেন
অক্সফোর্ডের ম্যানেজমেন্ট শিক্ষক কুনাল বসু লিখছিলেন তাঁর পরবর্তী উপন্যাস। তা নিয়েই সাক্ষাৎকার। রবিবার দুপুরে অফিসে বসে ঠিক হল সাক্ষাৎকারের সঙ্গে জিগোলোদের ওপর একটা প্রতিবেদনও লিখতে হবে। শুরু হল কাজ। লেখা প্রকাশের পরে আনন্দ প্লাস দফতরে ফোনের বন্যা। কেউ মজা করে ফোন করছিলেন, তো
কেউ উৎসুক হয়ে। একজন তো মিনতি করে বললেন, “আমি শিক্ষিত, বেশ কিছু ভাষাও বলতে পারি। দয়া করে যদি জিগোলোদের ডেরার নম্বরটা আমাকে দেন! এক মাসের পকেট মানি-তে একটু শর্ট পড়েছে।”
|
|
কেয়া চক্রবর্তী ফিল্ম স্টোরি
কানাঘুষো শুনেছিলাম যে, কেয়া চক্রবর্তী-র ওপর একটি সিনেমা হচ্ছে। কে পরিচালক বা কারা অভিনয় করছেন তা জানতাম না। বাংলা অ্যাকাডেমির সেমিনারে গিয়ে কেয়া চক্রবর্তীর কথা উঠেছিল দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের ভাষণে। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তকে নিয়ে অনেক বিতর্কিত কথাও হয়েছিল। ব্রাত্য বসু-র সঙ্গে এই প্রসঙ্গে কথা হতে ওঁকে বললাম কেয়া চক্রবর্তীকে নিয়ে টলিউডে কেউ ফিল্ম বানাচ্ছেন।
ব্রাত্য বলেছিলেন দেবেশ করছেন। আর তিনি অভিনয় করছেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে! স্কুপ নিউজ।
কিন্তু দেবেশবাবু মুখ খুলবেন না। বললেন, “আমি বেসিক্যালি ভিতু। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না এখন।” বহু কষ্টে শেষ পর্যন্ত রাজি হলেন। প্রতিবেদনটা বেরোল। তার পর সোহিনি সেনগুপ্তর সাক্ষাৎকার। বেশ টানটান উত্তেজনা নাট্যমহলে। পরে অন্য একটা কারণে একদিন দেবেশকে ফোন করেছি। বললেন, “আমি ব্রাত্য, বাবুয়া (সোহিনি) বসে আছি একসঙ্গে। আজ বাবুয়া-র জন্মদিন। ও ব্রাত্যর বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে এসেছে!”
স্বাস্থ্যের বিনিময়ে হেডলাইনের রসদ জোগাড় হয় না
রামগোপাল বর্মা-র ‘দ্য অ্যাটাকস অব ২৬/১১’ মুক্তি পাওয়ার পর ঠিক হল এমন একজনের সাক্ষাৎকার নেওয়া দরকার, যিনি ওই হামলার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে জড়িত। মনে পড়ল বিনিতা কামতে-র কথা। ভারতের বীর শহিদ অশোক কামতের স্ত্রী। পরের দিন বিনিতার অ্যাঞ্জিওগ্রাফ হবে। এ দিকে লেখার ডেডলাইন।
কী করে পুরনো সব স্মৃতি আবার সেঁকতে বলি তাঁকে? মনের ওপর চাপ পড়বে তো খুব। হয়তো বিনিতা বুঝতে পেরেছিলেন আমার দ্বন্দ্বটা। বললেন অ্যাঞ্জিওগ্রাফ করতে যাওয়ার ঠিক আগেই স্মৃতিচারণ করবেন! কথা বলতে গিয়ে মুম্বই পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়ার প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন।
বেশ উত্তেজিত হয়ে বললেন যে, ব্যক্তি রাকেশ মারিয়ার উপর ক্ষোভ না থাকলেও তিনি আজও ক্ষুব্ধ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে। কেন তাঁর স্বামীর মৃত্যুর রাতের ঘটনা সম্পর্কে সব তথ্য তাঁকে ঠিকমতো দেওয়া হয়নি। ফোনের উল্টো দিকে তাঁর গলা কাঁপতে শুরু করে। ভাল কপির লোভ সাংবাদিকের থাকেই। আরও কথা বললে নিশ্চয়ই অনেক বিতর্কিত তথ্য উঠে আসত। কিন্তু এ সব কীসের বিনিময়ে? যে মহিলা তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন, তাঁর স্বাস্থ্যের বিনিময়ে তো হেডলাইনের রসদ জোগাড় হয় না। কথা থামিয়ে দিলাম। বললাম এ বার আপনি টেস্ট-য়ের জন্য রেডি হোন। আমার কপি হয়ে গিয়েছে।
কিছুতেই সলমন নিয়ে কোনও কথা বলবেন না সোমি
না, সলমন খানকে নিয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেবেন না তিনি। এটা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন ই-মেলে। যে ক’টা প্রশ্ন সলমনকে নিয়ে করেছিলাম, একটারও উত্তর দিলেন না। শেষ পর্যন্ত ভাবলাম একবার ফোনে ধরতে পারলে হয়তো
বা মত পাল্টাতেও পারেন। ই-মেল করে লিখলাম যে কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই যদি একবার ফোন করতে পারি। সোমি থাকেন আমেরিকায়। টাইম জোন-য়ের বিস্তর ফারাক। ঘুম থেকে উঠে প্রায় চোখ কচলাতে কচলাতে পৌঁছলাম অফিসে। ঠিক একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল বিতর্কিত আফগানি মডেল ভিদা সমাদজায়ের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে। সুরক্ষার কারণে তাঁর ফোনটা লকড্ ছিল। সেটা আনলক করতে অনেক ঝক্কি পোয়াতে হয়েছিল। যখন ভিদাকে পাওয়া গেল, তখন আমেরিকায় মধ্যরাত। সে আবার অন্য গল্প! |
|
একবার ফোনটা বাজতেই তুলে নিলেন সোমি। এ-কথা সে-কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ নিজেই টেনে আনলেন সলমন প্রসঙ্গ। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল যে সোমির গলাটা ধরে আসছে কথা বলতে বলতে। দু’এক পশলা বৃষ্টির ফোঁটার মতো আজও তাঁর মন সলমনের স্মৃতিতে সিক্ত।
জিজ্ঞেস করেছিলাম বাংলার কোনও মেয়ে যদি আমেরিকায় বিয়ের পরে নির্যাতিত হন, তাঁকে কি সোমি সাহায্য করবেন?
উত্তরে বলেছিলেন “হায়দরাবাদের একটি নিপীড়িত মেয়েকে নিজের বাড়িতে এনে রাখার চেষ্টা করছি। আমেরিকাতে ওর স্বামী ওদের ছেলেকে নিয়ে থাকে। কিন্তু এই মেয়েটিকে বাচ্চার সঙ্গে দেখা করতে দেয় না। আস্তে আস্তে হয়তো অন্য আরও মেয়েদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।”
মেরি ‘মা’
প্রিয়ঙ্কা চোপড়া তখন সদ্য ঘুরে গিয়েছেন মণিপুর থেকে। সেই প্রসঙ্গে মেরি কমের সাক্ষাৎকার। স্বামী ওনলের ঠিক করে দিলেন সন্ধেবেলা যে সময় তাঁদের তৃতীয় সন্তান প্রিন্স ঘুমিয়ে থাকবে, তখন সাক্ষাৎকারটা নেওয়া হবে।
প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে অনেক গল্প করলেন মেরি। স্বীকার করেছিলেন যে এক সময় তাঁকেও ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয়েছিল। সাক্ষাৎকারের শেষে অনুরোধ করেছিলাম বক্সিং রিং-য়ের বাইরে অন্য মেরির একটা ছবি যদি পাঠানো যায়। ওনলের একটু সময় চাইলেন। দু’দিন পর ফোন করে বললেন আনন্দ প্লাস-য়ের জন্য আলাদা করে মেরি ও তাঁদের তিন ছেলের একটা ছবি তোলানোর ব্যবস্থা করেছেন। মেল খুলতেই দেখি দু’টো ছবি। একটা মেরি ও তাঁর তিন সন্তানের। অন্যটা আজও অপ্রকাশিত। নখে কালো নেলপলিশ। মাথায় হেয়ারব্যান্ড। আর পুঁচকে প্রিন্স মাথা এলিয়ে মায়ের বুকে। |
|
|
|
|
|