মাঠের মধ্যেই ধাক্কাধাক্কি চেতেশ্বর পূজারা আর অশোক দিন্দার!
স্বাভাবিক ভাবেই এটা জেনে মনে হতে পারে, কোনও বড়সড় অশান্তির উৎস। ওই সময় যা অবস্থা, যে ভাবে উইকেট আঁকড়ে পড়েছিলেন ‘ভারতীয় ব্যাটিংয়ের নতুন দেওয়াল’, তাতে ঘরের মাঠে বাংলা পেসারের অধৈর্য হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। যথেষ্ট শিকার না পেয়ে তখন যেন খেপেছিলেন ‘নৈছনপুর এক্সপ্রেস’।
মাঠের বাইরে থেকে ব্যাপারটা তেমনই মনে হলেও খেলার পর দিন্দার কাছে ঘটনাটা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি “ওটা তো আমাদের মধ্যে একটা ইয়ার্কি” বলে উড়িয়ে দিলেন। যদিও দিন্দার ‘ইয়ার্কি’র মুহূর্তে দুই আম্পায়ার বাংলা দলের বল বদলের আর্জি মেনে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন এ নিয়ে সন্দেহ নেই। নইলে ‘ইয়ার্কি’ হয়তো খারাপ দিকেই যেত!
রঞ্জিতে দুই টিম ইন্ডিয়া সদস্যের মন কষাকষির কারণটা ওই বল বদলের আর্জিই। পূজারা বলতে চেয়েছিলেন, বল এমন কিছু খারাপ হয়ে যায়নি যে, এখনই তা বদলাতে হবে। এই নিয়েই ঝামেলা, যা আপাত ভাবে ঠান্ডা হয়ে গেলেও বাংলার পেসারদের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে দেয়।
উইকেটের এক দিক থেকে যখন তাঁর সতীর্থদের আসা-যাওয়া নিয়মিত হয়ে উঠেছে, তখন অন্য দিকে স্তম্ভ হয়ে উঠেছেন পূজারা। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে ইডেনে ওয়ান্ডারার্স বা কিংসমিডের মতো উইকেটে পেয়ে তাঁর নিশ্চয়ই খুশির সীমা নেই। |
পূজারাকে ফিরিয়ে দিন্দার উচ্ছ্বাস। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
চার ঘণ্টা ইডেনের সবুজ উইকেটে পড়ে থেকে ডেল স্টেইনদের সামলানোর প্রচুর রসদ নিয়ে নিলেন। কিন্তু ওই ঘটনাটার পরই যেন কিছুটা দিকভ্রষ্ট দেবু মিত্রের প্রিয় ছাত্র চিন্টু। যখন তিনি ৯৫-এ, তখনই শিবশঙ্কর পালের গুড লেংথ বল তাঁর প্যাড ছুঁয়ে চলে যায়। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর বোলারের হতাশা দেখে মনে হল, তাঁর কাছে সেটা অবিশ্বাস্য। সারা দিন অসাধারণ বল করার পরেও সঠিক ফল না পেয়ে যা হয় আর কী!
ওই ওভারেই পূজারাকে ফের ‘বিট’ করেন শিবশঙ্কর। খেলার পর অবশ্য বিতর্ক এড়াতে এই নিয়ে কিছু বললেন না তিনি। তাঁর বলই বাউন্ডারি পার করিয়ে দিয়ে সেঞ্চুরির গণ্ডি ছুঁলেন পূজারা। কিন্তু তার পরই দিন্দার শর্ট বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাটের ভিতরের কানা দিয়ে বলটাকে স্টাম্পে টেনে নেন। দিন্দার মতে, “সারা ইনিংসে ওই এক বারই অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়েছিল, তাতেই আউট। ওকে টলানো মুশকিল হয়ে গিয়েছিল।”
৯০ থেকে ১০১-এ যেতে পূজারার লেগে যায় ২৩ বল। গোটা ইনিংসটা ১৪৬ বলের, যাতে ১৫টা বাউন্ডারি ও অনুষ্টুপকে মারা একটা ছয়। পূজারা ফিরে গেলেন ২০৭-এ আর সৌরাষ্ট্র শেষ ২২৫-এ। সকালে ওপেনার ভূষণ চহ্বাণকে ফেরানোর পর দিন্দা দিনের শেষে ফেরালেন মাকওয়ানা আর সানন্দিয়াকেও। তবে মাকওয়ানার কঠিন ক্যাচ স্লিপে অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় নেওয়ায় সন্দীপন দাসকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত দিন্দার।
৭৮ রানে এগিয়ে থাকা বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসে রোহন বন্দ্যোপাধ্যায় ওপেন করতে পারেননি। এ দিন ফিল্ডিংয়ে ডান কাঁধে চোট পান। এমআরআই রিপোর্টে অবশ্য তেমন কিছু নেই বলে রাতে জানাচ্ছেন লক্ষ্মী। অধিনায়কের আশা, শনিবার ব্যাট করবেন রোহন। তিন পয়েন্টের ব্যবস্থা করে নিয়ে এখন যে ছ’পয়েন্টের জন্য ব্যাটসম্যানদের দিকে তাকিয়ে বাংলা। |
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলা ৩০৩ ও ৫-০।
সৌরাষ্ট্র ২২৫ (পূজারা ১০২, দিন্দা ৪-৬৫, সৌরভ ২-৩৪, লক্ষ্মী ২-৩৬)। |