সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে তিনি আগেও কয়েক জন নেতানেত্রীর দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। আবার নাম না-করেই কিছু লোকের দিকে আঙুল তুললেন কুণাল ঘোষ।
সারদা কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার বিধাননগর কমিশনারেটে ডেকে পাঠানো হয়েছিল রাজ্যসভার এই তৃণমূল সদস্যকে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, “অনেকেই সারদার কাছ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সাহায্য নিয়েছেন। তাঁরা এখন দেব-দেবী সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।” কিন্তু এই দেব-দেবী কারা, তা অবশ্য খুলে বলতে চাননি তিনি। তবে তিনি যাঁদের দেব-দেবী বলছেন, তাঁদের কটাক্ষ করেই তাঁর বক্তব্য, সারদার কর্মী ও আমানতকারীরা বিপদে পড়লেও ওই সংস্থার কাছ থেকে নানা ভাবে সুবিধাভোগীরা নিরাপদে রয়েছেন!
এ দিন পুলিশি তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘তদন্তের উদ্দেশ্য কী? সারদা কাণ্ডের রহস্য ভেদ করা, নাকি সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী এবং আরও কয়েক জনের ঘাড়ে দোষ চাপানো?” তাঁর এই বক্তব্যে পুলিশের একাংশ মনে করছেন, বারবার কমিশনারেটের অফিসে ডেকে এনে যে-ভাবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাংসদ।
সারদার সংবাদমাধ্যম বিভাগের কর্তা ছিলেন কুণালবাবু। তছরুপ ধরা পড়ার পরে তাঁর দিকেও আঙুল ওঠে। পুলিশ জানাচ্ছে, সারদা কাণ্ডের তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে কুণালবাবুকে আগেই ন’বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এ দিন ছিল দশম দফা। এ দিন যে তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তা জানিয়ে বুধবার রাতেই কুণালবাবুকে ফোন করেন বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকালেই তাঁকে কমিশনারেটের অফিসে পৌঁছে যেতে হবে। কিন্তু কুণালবাবু পুলিশকে জানান, দিল্লিতে একটি বৈঠকের জন্য তিনি সকালে আসতে পারবেন না।
পুলিশি সূত্রের খবর, সন্ধ্যার বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতায় আসেন কুণালবাবু। রাত পৌনে ৮টা নাগাদ হাজির হন কমিশনারেটের অফিসে। বিমানযাত্রার ক্লান্তি ফুটে উঠেছিল তাঁর চোখেমুখে। ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ চলে। ৯টার পরে তিনি কমিশনারেটের অফিস ছাড়েন। তার আগে দাবি করেন, সারদার টাকা লেনদেন সংক্রান্ত কোনও চুক্তিতে তিনি সই করেননি। এর আগেও একই দাবি করেছিলেন তিনি। এ দিন বলেন, “আমি প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত প্রমাণ করতে পারলে আমার যেন ফাঁসি হয়।”
|