জেরায় তিন নেতার নাম তুলে সরব কুণাল
ক জন রাজ্যের মন্ত্রী। এক জন তৃণমূলের সাংসদ ও একটি দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদক। অন্য জন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি এবং তৃণমূলের বীরভূম জেলার পর্যবেক্ষক। মঙ্গলবার সারদাকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের এই তিন নেতার দিকে সরাসরি আঙুল তুললেন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ। এ দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)-এর জেরার পরে বাইরে এসে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া এই সাংসদের মন্তব্য, এই তিন জন সারদা কাণ্ডের অনেক কিছু জানেন। এর আগে কুণালবাবু বলেছিলেন, সারদা কাণ্ড থেকে ন’জন ব্যক্তি উপকৃত হয়েছেন এবং তাঁরা সারদা কেলেঙ্কারির বিষয়ে বিস্তারিত জানেন। তাঁদের কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না, সে সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন ওই ন’জনের নাম মনে না করতে পারলে তিনি তাঁদের নাম বলে দেবেন বলেও ওই সময়ে জানিয়েছিলেন কুণালবাবু।
এ দিন কী বলেছেন তিনি?
মঙ্গলবার ইডি-র জেরার পরে বাইরে এসে কুণালবাবু বলেন, “একটি দৈনিক সংবাদপত্রের সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের কী চুক্তি হয়েছিল, কত টাকা দেওয়া হয়েছে, কী বৃত্তান্ত সে বিষয়ে আমি বলতে পারব না। বলতে পারবেন সৃঞ্জয় বসু (তৃণমূল সাংসদ)। লাস ভেগাসের অনুষ্ঠানে সুদীপ্ত সেন গিয়েছিলেন, কী বৃত্তান্ত, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন রজত মজুমদার (প্রাক্তন ডিজি)। আমি বলতে পারব না। বিষ্ণুপুর থেকে কী ভাবে সুদীপ্ত সেনের উত্থান, সে বিষয়ে পুরোটা আমি বলতে পারব না। বলতে পারবেন মদন মিত্র (পরিবহণমন্ত্রী)।”
কুণালবাবুর এই বক্তব্যের পরে কী বলছেন ওই তিন জন?
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সৃঞ্জয় বসু বলেন, “২০১২ সালের মে মাস পর্যন্ত সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গে সারদার টেলিভিশন চ্যানেলের সম্পাদকীয় পরিষেবা দেওয়ার চুক্তি ছিল। এটা নতুন কথা নয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এই চুত্তির বিষয়টি জানেন। এমনকী, সংস্থার কর্মীরাও জানেন। সুতরাং, পুরনো কথা নতুন করে আর কিছু বলব না।”
রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি রজত মজুমদার তৃণমূলের বীরভূম জেলার পর্যবেক্ষক। কিছু দিন সারদা গোষ্ঠীর নিরাপত্তা-পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার রজতবাবুকে ফোনে ধরা হলে তিনি প্রথমে বলেন, “আমি এখন ব্যাঙ্ককে। এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।” কিন্তু এর পরেই তিনি বলেন, “২০১২ সালে আমেরিকায় বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলনের জন্য সুদীপ্তবাবু চার কোটি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত দেন দু’কোটি টাকার মতো। শিল্পীদের সম্মানদক্ষিণা, বিমানভাড়া পুরোটাই চেকে দেন। আমি চেকগুলো যথাস্থানে পৌঁছে দিয়েছি মাত্র।” কুণালবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে রজতবাবুর মন্তব্য, “ওই সম্মেলনের সরাসরি সম্প্রচারের জন্য সারদা গোষ্ঠী প্রচুর খরচ করেছিল। এই সম্প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন কুণালবাবু। এ জন্য কোন খাতে কী খরচ হয়েছিল, সেটাও প্রকাশ্যে আসা দরকার।”
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “আমার পক্ষে বলা মুশকিল, কেন কুণাল এ রকম বলেছেন। তবে সারদা-গোষ্ঠীর অফিস বিষ্ণুপুরে আমার বিধানসভা এলাকার লাগোয়া ছিল। সেখানকার একটি মন্দিরের অনুষ্ঠানে হয়তো সারদা গোষ্ঠীর কয়েক জন ছিলেন। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।”
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সাত তলায় ইডি-র দফতরে আসেন কুণালবাবু। সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে ছিলেন ইডি-র আধিকারিকেরা। দফতরে ঢোকার আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ইডি-র আধিকারিকদের বলব, আমাকে আর সুদীপ্ত সেন-কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে।” পাঁচ ঘণ্টা পর ৩টে ২৫ নাগাদ দফতর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সুদীপ্ত সেনকে যাঁরা চেনেন, সারদা সম্পর্কে যাঁরা জানেন, এতে কার লাভ হয়েছে বা হয়নি, সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। শুধু আমি তাঁদের কাছে আবেদন করছি, তাঁরাও আমার মতো তদন্তে সাহায্য করুন।”
সূত্রের খবর, সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা নিয়ে তাঁর আবেদনে সাড়া দেননি ইডি-র আধিকারিকেরা। সুদীপ্ত সেনও এতে রাজি নন বলেই ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এর আগে দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে ইডি-র আধিকারিকেরা নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। জানা গিয়েছে, এ দিন সুদীপ্ত সেনকে আয়কর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.