বাম আমলের বকেয়া মহার্ঘভাতা (ডিএ) মেটানোই শুধু নয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পঞ্চম বেতন কমিশনের ‘এরিয়ার’ বা বকেয়া ও প্রতি বছর বেতন বাড়ানোর ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নজির সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, বামফ্রন্ট জমানায় আইনসভার ভিতরে ও বাইরে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হত। এখন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিরোধী দলনেতাকে বলার জন্য আহ্বান জানান। যে সরকার কাজ করতে চাইছে, তাকেই বরং আটকাতে চাইছে বাম সরকারের মন্ত্রীরা।
বিরোধী দলকে তাঁর প্রশ্ন, জ্যোতি বসুর আমলে ৩২ মাস কেন ডিএ ফ্রিজ করা হয়েছিল? তখন এত ঋণের বোঝা না থাকা সত্ত্বেও কেন প্রায় তিন বছর ডিএ পাননি সরকারি কর্মচারীরা? শিল্পমন্ত্রীর কথায়, বাম সরকার যখন ২০১১ সালে বিদায় নিল, তখন ২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ। পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ করা দুই কিস্তির ‘এরিয়ার’-ও মেটানো হয়নি। ২৩% ডিএ পাওনা ছিল কর্মচারীদের। এক দিকে ঋণের বোঝা, অন্য দিকে কর্মচারীদের মোটা পাওনার দায় নিয়ে প্রশাসন হাতে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়া মেটাতেই ৯৭৬ কোটি টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। গত দু’বছরে মেটানো হয়েছে ১৭% ডিএ। জানুয়ারিতে আরও ৬% ডিএ দেওয়া হবে। শিল্পমন্ত্রী জানান, বকেয়া ১৭% ডিএ দিতেই ৫১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের তুলনায় রাজ্যের কর্মীরা ৩২% কম ডিএ পাচ্ছেন। তা-ও ধীরে ধীরে মিটিয়ে দেওয়া হবে।
শিল্পমন্ত্রীর দাবি, আর্থিক সঙ্কট সত্ত্বেও প্রতি বছর বেতন কমিশনের নির্দেশ মেনেই ৩% হারে কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। পুজো বোনাসও হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৬০০ টাকা করা হয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যটাকে যে অবস্থায় ছেড়েছেন তাতে নিলামেও কেউ কিনত না। তা-ও কর্মীদের পাওনা আস্তে আস্তে মেটাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে হইচইয়ের কী আছে?
বাম আমলের এক বর্ষীয়ান প্রাক্তন মন্ত্রীর পাল্টা দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশে একটা বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস। অন্যটা ‘এরিয়ার’। তাঁর বক্তব্য, বেতন পুনর্বিন্যাস বাম আমলেই হয়েছিল। রাজ্যে সরকার বদলে যাওয়ায় তৃতীয় তথা শেষ কিস্তির ‘এরিয়ার’ দিতে পারেনি বামেরা। জ্যোতিবাবুর আমলে ‘ডিএ ফ্রিজ’ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, আশির দশকে এক বার এমন হয়েছিল। পরে একসঙ্গে দশের বেশি কিস্তি মেটানো হয়।
|