ডার্বি দামামা চিডি-মোগাকে আটকাতে
তৈরি বাগানের বঙ্গ ডিফেন্স
ফুটবল জীবনের প্রথম ডার্বিতে শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়িত্ব ছিল সুভাষ ভৌমিককে আটকানোর। সাঁইত্রিশ বছর আগের স্মৃতিচারণ করতে বসে ভারতের অন্যতম সেরা লেফট ব্যাক বলছিলেন, “মোহনবাগানে সেই সময় সুভাষ ভৌমিক মানে কোনও বিদেশি ফুটবলারের চেয়ে কম নয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, ওকে একটাও বল ধরতে দিইনি সে দিন। আর সেটা পেরেছিলাম টাইমিংয়ের জোরে। ঠান্ডা মাথায় খেলেছিলাম। একটাও ফাউল করিনি।”
একাশির মহমেডানের ঐতিহাসিক দলে অলোক মুখোপাধ্যায়ের বিপক্ষে ছিলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। স্মৃতির সরণিতে নিজের প্রথম বড় ম্যাচের দৃশ্যপট মনে পড়তেই ভারতের সর্বকালের তারকা সাইডব্যাক বলে উঠলেন, “সেই মোহনবাগান ম্যাচটায় একটা কথা ভেবেই নেমেছিলাম। বিপক্ষে কে খেলছে, দেখব না। তাতে আত্মবিশ্বাস কমে যাবে। তবে প্রসূন-প্রশান্তর মতো আমাদের টিমের সিনিয়ররা বলেছিল, সুরজিতদাকে এক বার আটকাতে পারলে জাতীয় দলের জার্সি পাকা। আর পরের দিনই সেটা হয়েছিল। চল্লিশ জনের দল হয়ে যাওয়ার পরেও আমি স্পেশ্যাল ডাক পেয়েছিলাম।”
বাগানের দুই সাইডব্যাক শৌভিক ও প্রীতম।
সত্তর এবং আশির দশকের সেই আক্রমণাত্মক মেজাজের সঙ্গে অদ্ভুত ভাবে মিশে যাচ্ছে করিম বেঞ্চারিফার তরুণ ভারতীয় ডিফেন্ডারদের মানসিকতা। হতে পারে সুভাষ-সুরজিতের মতো দেশজ বিরাট নাম বিপক্ষ শিবিরে নেই। কিন্তু চিডি-মোগার মতো বিদেশি তারকা তো আছেন! আর তাঁদের সামলাতে প্রস্তুতিতে কোনও কমতি রাখছেন না মোহনবাগানের দুই বঙ্গসন্তান ডিফেন্ডার শৌভিক ঘোষ এবং প্রীতম কোটাল। দু’জনই উত্তরপাড়ার অনুপ নাগের ছাত্র। রবিবার ফুটবল জীবনের প্রথম ডার্বিতে নামার আগে তাই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার সমস্যা হয়তো নেই। কিন্তু প্রথম ডার্বির চাপ কি সামলাতে পারবেন? বালির বাসিন্দা শৌভিক বলছিলেন, “চিডি ভয়ঙ্কর। যে করেই হোক ওকে আটকাব।” দু’হাত দূরে দাঁড়িয়ে প্রীতম আবার বললেন, “উচ্চতার জন্য মোগাকে আমি চিডির থেকে এগিয়ে রাখব। তবে এই ম্যাচটায় প্রমাণ করে দিতে চাই যে, আমরা ভারতীয়রাও বিদেশিদের চেয়ে কোনও অংশে কম নই।”
রবিবারের বড় ম্যাচে চিডিদের আটকাতে মোহনবাগানের চার ডিফেন্ডার খুব সম্ভবত হতে চলেছেন রোউইলসন, আইবর, শৌভিক এবং প্রীতম। ডিফেন্সিভ স্ক্রিনে কিংশুক। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে প্র্যাকটিসের পরে প্রত্যেককে আত্মবিশ্বাসী শোনালেও, খাতায় কলমে তাঁরা কতটা নির্ভরযোগ্য, সেটা দেখে নেওয়া যাক।

যুবভারতীতে করিম যখন ডার্বি মহড়ায়।
শৌভিক ঘোঘ: লেফট ব্যাক। উচ্চতা, ওভারল্যাপিং দক্ষতা এবং ফুটবল বুদ্ধি ভাল। তবে কড়া ট্যাকল করার ক্ষমতা নেই।
প্রীতম কোটাল: রাইট ব্যাক। শরীরকে ভাল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সে রকম গতি নেই।
আইবর: স্টপার। চার জনের মধ্যে সবচেয়ে ফিট। ‘অফ দ্য মার্ক’ গতি ভাল। নিখুঁত টাইমিং। প্রতিবর্তী ক্রিয়া খুব ভাল। কিন্তু পাওয়ার ফুটবলে খামতি আছে।
রোউইলসন: স্টপার। আক্রমণাত্মক, ভাল হেড করেন। পাসিং দক্ষতা তেমন নেই। মিস পাস করার প্রবণতা আছে।
কিংশুক দেবনাথ: ডিফেন্সিভ স্ক্রিন। শক্তি কভারিং এবং গতি। দুর্বলতা উচ্চতা। বিপক্ষের ফার্স্ট বল ধরতে সমস্যা হয়।
বাগান ডিফেন্সের শক্তি এবং দুর্বলতা যা-ই থাকুক না কেন, নিজের তরুণ ব্রিডেগকে নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী কোচ করিম। এ দিন প্র্যাকটিস শেষে বলে গেলেন, “আগের ইউনাইটেড স্পোর্টস ম্যাচে ওরা দেখেছে একটা মিস পাস হলে গ্যালারি থেকে কী রকম প্রতিক্রিয়া হয়। ডার্বি ম্যাচ কী হবে, সেটা আর আলাদা করে ওদের বলার কিছু নেই। ওরা নিজেরাই বুঝতে পারছে।”

ছবি: উৎপল সরকার।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.