|
|
|
|
বিতর্ক দিয়ে শুরু অ্যাসেজ-যুদ্ধ |
অপমানের জবাবে ব্রডের পাঁচ উইকেট
নিজস্ব প্রতিবেদন |
অ্যাসেজের একশো একত্রিশ বছরের ইতিহাস কম বিতর্কিত মুহূর্তের জন্ম দেখেনি। ডগলাস জার্ডিনের ‘বডিলাইন’ থিওরি থেকে শুরু করে ডেনিস লিলি-র অ্যালুমিনিয়াম ব্যাট নিয়ে নেমে পড়া, অল্ডারম্যানের সমর্থকদের থাপ্পড় খাওয়া, পিচে গর্ত করে তেল ঢেলে রাখা— ঐতিহ্যশালী টুর্নামেন্টে গর্বের মুহূর্ত আছে যেমন, তেমন তাতে কলঙ্কের কাহিনিও কম কিছু নেই। সাম্প্রতিকেই ওভালে অ্যাসেজ জিতে ইংরেজ ক্রিকেটারদের ন্যক্কারজনক প্রস্রাব-পর্ব দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। বৃহস্পতিবারের ব্রিসবেনে যেটা ঘটল, তা অতীত-উদাহরণের মতো চরম বিতর্কিত কিছু নয়। কিন্তু ইংরেজ-অস্ট্রেলীয়দের যুদ্ধকে মহানাটকীয় করে তোলার মশলা আজও যথেষ্ট থেকে গেল।
যার কেন্দ্রবিন্দুতে— স্টুয়ার্ট ব্রড এবং অজি-মিডিয়া।
এ দিন সকালে অস্ট্রেলীয় সংবাদপত্র ‘ক্যুরিয়র মেল’-এর কভারপেজ তীব্র বিতর্ক তৈরি করে দেয় ক্রিকেটমহলে। যেখানে বড় বড় করে লেখা: ‘কভারটা ওল্টান। স্টুয়ার্ট ফ্রড-কে পেয়ে যাবেন!’ শুধু তাই নয়, ইংরেজ পেসারকে আরও অপমানজনক পরিস্থিতিতে ফেলে লেখা হয়— ‘ব্রড ব্যান’!
|
ব্রডময় গাব্বা। মাঠে ক্লার্কদের উড়িয়ে। |
ইংরেজ পেসার উত্তরটাও যথাযোগ্য ভাবে দিয়ে রাখলেন। পাঁচ উইকেট নিয়ে। মাইকেল ক্লার্ক সমেত অস্ট্রেলীয় টপ অর্ডারকে একাই চূর্ণ করে। এবং দিনের শেষে প্রেস কনফারেন্স রুমে ঢুকলেন সকালের ‘ক্যুরিয়র মেল’ সঙ্গে নিয়ে, আর ঢুকে তির্যক ভাবে বলে রাখলেন, “প্রেস কনফারেন্স রুমের বাইরেও কাগজটা দেখলাম। দেখে খুব হাসিও পেল। আমাদের টিমে যিনি মনঃস্তত্ত্ববিদ আছেন, তিনি জানেন কে কেমন মানসিকতার লোক। টিমে তিন জন আছে যারা এ রকম অপমানিত হলে ঠিকঠাক সামলে উঠতে জানে। কেপি। আমি। আর ম্যাট প্রায়র। তা হলে বলতে হয়, অস্ট্রেলিয়ানরা ঠিক লোককেই টার্গেট করেছে!”
ঘটনা হল, ব্রিসবেন নয়, গত অ্যাসেজ থেকেই ব্রড বনাম অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার ঠোকাঠুকি লেগে রয়েছে। গত অ্যাসেজের প্রথম টেস্টে আউট হওয়া সত্ত্বেও ব্রডের দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে যাবতীয় উষ্মার সূত্রপাত। ওই সময় ব্রডকে ‘প্রতারক’ বলতে ছাড়েননি অস্ট্রেলীয় কোচ ডারেন লেম্যান। হুমকিও দেন যে, অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতি সিরিজ খেলতে এলে কপালে দুঃখ আছে ইংরেজ পেসারের। আর সেটা যে কোন পর্যায়ে যেতে পারে, ব্রিসবেন টেস্টের আগেই বোঝা গিয়েছে। কাগজে তাঁর নাম পাল্টে ‘স্টুয়ার্ট ফ্রড’ করে দেওয়া, ‘পমি চিট’ ‘উপাধি’-তে ভূষিত করা, ব্রিসবেন-জনতার কাছে কাগজের মাধ্যমে আবেদন ‘আসুন আমরা নীরবতা দিয়ে ইংরেজ পেসারকে অভ্যর্থনা জানাই। আমরা কথা দিচ্ছি ম্যাচ রিপোর্টে ওর নাম কোথাও উল্লেখ হবে না’, বাদ কী গেল?
|
গ্যালারিতে বিতর্কিত ট্যাবলয়েডে। |
কিন্তু তখনও কারও জানা ছিল না, প্রত্যুত্তর আসবে এ ভাবে, এমন মেজাজে। স্কোরবোর্ড বলছে, প্রথম দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ২৭৩-৮। আর ব্রডের পরিসংখ্যান বলছে: ২০-৩-৬৫-৫! ব্র্যাড হাডিন (৭৮ ব্যাটিং) এবং মিচেল জনসন (৬৪) শেষ দিকে না টানলে দুর্দশা আরও বাড়তে পারত অস্ট্রেলীয়দের। রজার্স (১), ওয়ার্নার (৪৯), ওয়াটসন (২২), ক্লার্ক (১)—অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংয়ের প্রথম চারকেই এ দিন তুলে নেন ব্রড। শেষ দিকে জনসন।
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে কাগজ-সমেত উপস্থিত হয়ে সে দিকে ইঙ্গিত করে ব্রড বলেছেন, “এ সবের দিকে সময় দেওয়ার বিশেষ সময় আমি পাই না। দেশের হয়ে খেলার সুযোগটাই তাতিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।” সঙ্গে সংযোজন, “অ্যাসেজে একটা আলাদা কিছু আছে। যা আমার ভিতর থেকে সব সময় সেরাটা বার করে আনে।”
এখানেই শেষ নয়। বরং ব্যাগি গ্রিনদের উদ্দেশ্যে ছোট্ট একটা খোঁচাও দিয়ে গেলেন বিতর্কিত ইংরেজ পেসার। বলে দিলেন, তাঁরা ড্রেসিংরুমে অন্য টিম নিয়ে ভাবেন না। যত চাপ এখন অস্ট্রেলিয়ার উপর, অতএব সফরে ব্রড ও তাঁর টিমমেটরা নিশ্চিন্তে নিজেদের কাজটা করতে পারবেন।
যে সফরে নিজেদের ‘নিঃশব্দ ঘাতক’ বলে মনে হচ্ছে স্টুয়ার্ট ব্রডের! |
পুরনো খবর: ফের টুইটার বিতর্কে ব্রড-কেপি |
|
|
|
|
|