সরকারি দামে আলু সরবরাহ করার দাবিতে বুধবার জেলা কালেক্টরেটের মেন গেটে দলীয় কর্মী ও বিধায়ককে নিয়ে ৩ ঘণ্টা ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নুর। অবস্থান বিক্ষোভের জেরে এ দিন সকাল দশটা থেকে বেলা ১টা, জেলাশাসক কালেক্টরেটে ঢুকতে পারেননি। দুপুর একটা নাগাদ অতিরিক্ত জেলাশাসক সরকারি দামে জেলায় আলু সরবরাহের আশ্বাস দিলে অবস্থান বিক্ষোভ উঠে যায়।
জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমার বলেন, “আজকে টাস্ক ফোর্সের বৈঠক ডাকা হয়েছে। হিমঘরে আলু মজুত থাকার পরেও কেন ১৩ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ন্যায্য মূল্যে আলু সরবরাহের দাবিতে মঙ্গলবার মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স জেলা কালেক্টরেটের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ মৌসম শতাধিক কংগ্রেস কর্মীকে নিয়ে জেলা কালেক্টরেটের সামনের সিঁড়িতে বসে বিক্ষোভ শুরু করেন। ১৪ নভেম্বর কংগ্রেস সাংসদ আলু, শাকসবজি ও লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দলীয় কর্মীদের নিয়ে এই জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। সেদিন জেলাশাসক কংগ্রেস সাংসদকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ১৩ টাকা কেজি দরে আলু বাজারে বিক্রি করা হবে। তার পর থেকে কোনও দিনই জেলায় আলু সরকারি দামে বিক্রি হয়নি। |
মৌসম বলেন, “আমি সে দিন বলেছিলাম ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি ১৩ টাকা কেজি আলু বাজারে বিক্রি না হয় তবে ফের আন্দোলন শুরু করব। ৭২ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর ১৩ টাকা কেজি তো দূরের কথা, ২৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। জেলার অনেক বাজার থেকে আলু উধাও। আলু নিয়ে জেলা প্রশাসন রাজনীতি করছে।” তিনি জানান, “এ দিন ফের অতিরিক্ত জেলাশাসক আশ্বাস দেন টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পর থেকে বাজারে আলু যাতে ১৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় তা দেখা হবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলে দেখা গিয়েছে, মৌসমের উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভা এলাকায় তিনি ৩০ হাজার ভোটে পিছিয়ে। অথচ শেষ লোকসভা ভোটে তিনি জিতেছিলেন ৭০ হাজারের মতো ভোটে। অর্থাৎ পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিসেব মতো মৌসম এখন তাঁর লোকসভা আসনে এক লাখের উপর ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন। জেলা তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “সেই কারণেই মৌসম এখন হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া। তাই মৌসমকে সম্প্রতি বারবারই নানা রকম আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখাচ্ছে।” সাবিত্রী দেবী বলেন, “মৌসম অনেক সময় আন্দোলনের কথা বলেও পিছিয়ে আসছেন।” কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, মৌসম আলু নিয়ে এই আন্দোলনে প্রথমে অনশন করবেন বলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। তার পরে তা বিক্ষোভ সভায় বদলে দেন। মৌসম বলেন, “এটা আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসা নয়। আমরা প্রশাসনকে আরও একটু সময় দিলাম। যদি এর পরেও প্রশাসন তার প্রতিশ্রুতি না রাখে, তা হলে বড় আন্দোলনেই যাব। কংগ্রেস ব্লকে ব্লকে আন্দোলন শুরু করবে। প্রশাসনকে স্তব্ধ করে দেব।” সেই সঙ্গে মৌসমের দাবি, “লোকসভা ভোট আর পঞ্চায়েত নির্বাচন এক নয়। আসন্ন লোকসভায় কংগ্রেসই জিতবে এই আসনে।”
|