বাংলার ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-কে পাত্তা দিতে
চান না পূজারাদের বাঙালি কোচ
ডেনে ৬৪ মিনিট ও ওয়াংখেড়েতে ২৬৪ মিনিট— দুই টেস্টে তাঁর দুই ইনিংসের সময়সীমা। গোটা একটা টেস্ট সিরিজে এই সময়টা ব্যাট করে যেন আশ মেটেনি চেতেশ্বর পূজারার। বুধবার ইডেনের নেটে ঢুকে সে কথাটাই যেন বুঝিয়ে দিলেন। পৌনে এক ঘণ্টার প্র্যাকটিসে চোখে পড়ার মতো ছিল একাগ্রতা। দেখা যাচ্ছিল হরেক শটের রংমশালও।
নেটের বাইরে থেকে তা একমনে দেখে যাচ্ছিলেন এক বাঙালি। তবে ইনি বাংলার নন। সৌরাষ্ট্রের। কোচ দেবু মিত্রের সামনে ছাত্র পূজারার ব্যাটিং অনুশীলনের ধরন কিন্তু বাংলার বোলারদের চিন্তাটা বাড়িয়ে রাখল। একটা সময় এ বারের রঞ্জি মরসুমের জন্য বাংলার ক্রিকেট কর্তারা কোচ হিসাবে দেবু মিত্রের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। হয়তো সে জন্যই কলকাতায় পা দিয়ে তিনি একটু বাড়তি সতর্ক। রঞ্জি ম্যাচ শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে শুধু বলছেন, “জিততে হলে আমাদের ভাল খেলতে হবে। আর আমরা তো ভালই খেলছি। তা হলে না জেতার কারণ কী?”
আবার দেবুর দলকে আটকানোর জন্য বাংলার ক্রিকেটে তাঁরই এক বন্ধুকে দিয়ে ‘টেলর মেড’ উইকেট তৈরি করিয়েছেন অশোক মলহোত্ররা। যাতে বাংলার পেসাররা বাইশ গজে আগুন ঝরাতে পারেন। কিন্তু বাংলা শিবির যাকে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ বলে ভাবছে, প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের সেই উইকেট প্রসঙ্গ প্রায় উড়িয়ে দিয়ে দেবু বললেন, “উইকেট কেমন হবে, তা নিয়ে ভেবে কী করব? আমাদের ছেলেরা যে কোনও উইকেটেই খেলতে তৈরি। সুতরাং উইকেট নিয়ে অযথা ভেবে লাভ নেই।” তিন ম্যাচে এগারো পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা দলের কোচের গলায় এমন আত্মবিশ্বাসের সুর থাকাই স্বাভাবিক। বাংলা অবশ্য উইকেটের দিকেই তাকিয়ে। অনূর্ধ্ব ১৯ দলের বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার ইডেনে আসবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলার ম্যাচও দেখতে পারেন তিনি।
গুরু-শিষ্য

কোচ দেবু মিত্র-র সঙ্গে পূজারা। বুধবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
আগের ম্যাচ থেকে বাংলার দলে পরিবর্তন বলতে গেলে একটাই। ম্যানেজার সমীর দাশগুপ্তকে হঠাৎ করে সরানো হল! মাঠের এগারোয় অবশ্য কোনও বদল নেই। বুধবার প্র্যাকটিস শেষে বাংলার কোচ অশোক মলহোত্র বলেই দিলেন, “কাল একই দল নামবে। প্রথম এগারোয় কোনও বদল হচ্ছে না।” সোজা কথাটা হল, কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না বাংলা। এক সপ্তাহ আগেই উত্তরপ্রদেশের ঘাড়ে ৬৩২ রানের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল যারা, তাদের সমীহ করতেই হবে।
সৌরাষ্ট্রের রানের ফোয়ারা আটকানোর জন্যই ইডেনে হয়েছে পেস সহায়ক উইকেট, যাতে আর্দ্রতা রয়েছে এবং বাংলার পেসাররা সুবিধাও পেতে পারেন। অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল প্র্যাকটিসের সময় উইকেট দেখে বললেন, “আশা করি আমরা যেমন উইকেট চেয়েছিলাম, তেমনই পাব। দেখে ভালই লাগল। সব ঠিকঠাক থাকলে ভাল খেলা হবে।” ৯৯ নম্বর রঞ্জি ম্যাচ খেলতে নামার আগে লক্ষ্মীকে বেশ আত্মবিশ্বাসই শোনাচ্ছে। কোচও উইকেট দেখে ভরসা দেওয়ার সুরেই বললেন, “মনে হচ্ছে আগের ম্যাচের চেয়ে ভাল উইকেট পাব। আশা করি ম্যাচটার ফয়সালাও হবে।” বাংলা শিবিরে যাবতীয় চিন্তাভাবনাই যেন ইডেনের বাইশ গজকে কেন্দ্র করে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন পরিবেশ হয়তো পাবেন পূজারা। ঠাণ্ডা আবহাওয়া, সবুজ ভাব, আর্দ্র উইকেট। কে জানে, এই চ্যালেঞ্জটা পূজারাকে বাড়তি তাতিতে দেবে কি না। সদ্য টেস্ট সেঞ্চুরি করে আসা ভারতীয় ব্যাটসম্যান এই নিয়ে অবশ্য কিছু বললেন না। ব্যাটকে দিয়েই কথা বলাতে চান তিনি। সেই ‘কথা’ আটকানোর চেষ্টাতেই সবুজ স্পোর্টিং উইকেট ইডেনে, যা দেখে খোশমেজাজে পাওয়া গেল শিবশঙ্কর পাল, সৌরভ সরকার, অশোক দিন্দাদের।
বৃহস্পতিবার থেকে পিচে বল পড়ার পরও তাঁদের এমন মেজাজে পাওয়া যাবে তো?

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.