এক ব্যবসায়ীকে তিন দিন পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখেও তাঁকে আদালতে তোলা হয়নি। মালদহের সাদিপুর সিংহপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম এই অভিযোগ করেছেন জেলার পুলিশ সুপারের কাছে। কিন্তু পুলিশ সুপারও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওই ব্যবসায়ী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
ব্যবসায়ীর অভিযোগ, মোথাবাড়ি ফাঁড়ির ওসি রাজু খন্দকার ২ নভেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ফাঁড়ির লক-আপে আটকে রাখলেও তাঁকে কোর্টে তোলেননি। গ্রেফতার করেননি। মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি রাজ্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাজ্য পুলিশের ডিজি, উত্তরবঙ্গের আইজি ও মালদহ রেঞ্জের ডিআইজির কাছে নালিশ জানান তিনি। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আইনে বলে কাউকে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে নিকটতম আদালতে হাজির করতে হবে।” তবে সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “এ ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ হাতে পাইনি। তা হাতে পেলে পুলিশ আধিকারিককে দিয়ে অভিযোগের তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মোথাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজু খন্দকার বলেন, “ভাইয়ের স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগ নজরুলকে ফাঁড়িতে ডেকে পাঠানো হয়। ভাইয়ের স্ত্রীকে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছিল।” তাঁর কথায়, “৩ দিন কেন, ওই ব্যবসায়ীকে এক দিনও ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়নি।” রাজু বলেন, “ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ভাইয়ের বউ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা চলছে। পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে হেনস্থা করতে চাইছেন।” মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে এসে নজরুল বলেন, “ভাইয়ের স্ত্রীকে অপহরণের মামলায় আমাকে ২ নভেম্বর সকাল থেকে ৪ নভেম্বর রাত দশটা পর্যন্ত মোথাবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজু খন্দকার লক আপে আটকে রেখে ছিলেন।” ওই ব্যবসায়ী বলেন, “আমি রাজুবাবুকে বলি আমি ভাইয়ের স্ত্রীকে অপহরণ করতে যাব কেন! আমার কথা কিছুতেই বিশ্বাসই করছিলেন না তিনি। বিনা অপরাধে আমাকে ৩ দিন লকআপে আটকে রেখেছিলেন। ৪ নভেম্বর বিকেলে ভাই স্ত্রীকে ফাঁড়িতে হাজির করলে রাতে আমাকে লকআপ থেকে বের করে দেন রাজু খন্দকার। তারপরে তিন দিন লক আপে আটকে রাখার কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকিও দিয়েছিলেন।”
নজরুল জানান, ৬ নভেম্বর তিনি অভিযোগ জানান পুলিশ সুপারের কাছে। কিন্তু তারপরেও পুলিশ সুপার ব্যবস্থা না নেওয়ার সোমবার ওই ব্যবসায়ী ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। কয়েক দিনের মধ্যে মামলার শুনানি হবে। |