এতদিন যে দাবি তুলত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, এ বার সেই দাবিই তুলল তৃণমূলের অনুমোদিত একটি কর্মচারী সংস্থা।
মোর্চার সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ঠিক মুখে জিটিএ-তে কর্মরত প্রায় সাড়ে তিন হাজার অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করার দাবি জানিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দিল তৃণমূল অনুমোদিত ওই দার্জিলিং হিমালয়ান কর্মচারী সংগঠন। তৃণমূলের এই উদ্যোগে উদ্বিগ্ন মোর্চা। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমরাই গোড়া থেকে পাহাড়ের অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণের জন্য দাবি তুলেছি। আশা করি সেই দাবি আদায়ও করতে পারব।” মোর্চার অন্দরের খবর, দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ধারণা, পাহাড়ে তাঁদের পাল থেকে হাওয়া কেড়ে নিতে তৃণমূল এখন অস্থায়ী কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে চাইছে। তৃণমূল অনুমোদিত ওই কমর্চারী সংগঠনের অন্যতম নেতা বিন্নি শর্মা অবশ্য বলেন, “এই স্মারকলিপি দেওয়ার পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। আমাদের দলনেত্রী বরাবরই মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন। সেই মনোভাব থেকেই এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।”
সরকারি সূত্রের খবর, একবারে সকলকে স্থায়ী করা সম্ভব না হলেও পর্যায়ক্রমে তা যাতে হয় সেটা বিবেচনায় রয়েছে বলে কর্মচারী সংগঠনকে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের পক্ষে রাজেন মুখিয়া এবং বিন্নি শর্মা জানান, “রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আমাদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। একবারে যদি সম্ভব না-ও হয়, পর্যায়ক্রমে স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করার কথা আমরা জানিয়েছি। স্বরাষ্ট্র সচিব তা বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন।” আজ, বুধবার তৃণমূলের পাহাড়ের কর্মচারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন।
আগামী দিনে রাজ্য পাহাড়ের ওই অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করলে তার ‘কৃতিত্ব’ যাতে তৃণমূল একা তুলতে না পারে, সে জন্য মোর্চা নেতারা এখন মরিয়া। বুধবারই রাজ্য-মোর্চা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও ওই স্থায়ীকরণের প্রসঙ্গ উঠবে। মোর্চা সূত্রের খবর, গোর্খা পার্বত্য পরিষদের সময় থেকে অস্থায়ী হিসেবে কর্মরতদের স্থায়ী করার বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার জন্য রোশনদের নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। কেননা, জিটিএ গঠনের পরে বছর গড়াতে চললেও স্থায়ীকরণের ব্যাপারে মোর্চা নেতারা উদ্যোগী হননি, এই অভিযোগেই কর্মচারীদের একাংশ সংগঠন ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সুবাস ঘিসিংয়ের আমল থেকে দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের অধীনে ৫,৮১১ জন অস্থায়ী কর্মী কাজ করছিলেন। বর্তমানে ওই কর্মীরা জিটিএ-র অধীনে কাজ করছেন। ২০০৯ সালে রাজ্য সরকার অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার জন্য একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেই মতো নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়। |