যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে এখন থেকে এ রাজ্যেও আক্ষরিক অর্থে সারা জীবন সাজা ভোগ করতে হবে। রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে কেবল বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সাজার মেয়াদ হ্রাসের সংস্থান থাকবে।
নামে যাবজ্জীবন হলেও কার্যক্ষেত্রে এত দিন এ রাজ্যে ওই সাজার মেয়াদ ছিল ২০ বছর। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, যাবজ্জীবনের কোনও নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকবে না। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশের রূপরেখা মেনেই মঙ্গলবার বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল কারেকশনাল (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৩’ পাশ করানো হল। আগে ১৯৯২ সালের সংশ্লিষ্ট আইনে ২০ বছর জেল খাটলেই চলত। তার মধ্যেও কয়েদির ভাল আচরণ, অসুস্থতা-সহ বিভিন্ন কারণে ১৪ বছর সংশোধনাগারে কাটানোর পরে মুক্তির সুযোগ মিলত। সংশোধনী বিল পাশের পরে ২০ বছরের সময়সীমা আর কার্যকর থাকছে না বলে কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি এ দিন জানিয়েছেন।
তবে নতুন বিলে শুধু যাবজ্জীবনের ২০ বছরের মেয়াদ সংশোধন করা হচ্ছে, এই মর্মেই উল্লেখ থাকায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল বিধানসভায়। বিরোধী বিধায়কদের অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, যাবজ্জীবন মানে তা হলে এখন ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে? শাসক দলেরই বিধায়ক নরেশচন্দ্র চাকী যেমন সভায় বলেন, যাবজ্জীবন বলতে যে আমৃত্যু বোঝাচ্ছে, স্পষ্ট করে বিলে তা লেখা উচিত ছিল।
এসইউসি বিধায়ক তরুণ নস্কর আবার প্রশ্ন তোলেন, অপরাধীদের মানসিকতা সংশোধনের জন্য সংশোধনাগারে রাখা হয়। সেখানেই যদি আমৃত্যু অপরাধীকে থাকতে হয়, তা হলে সংশোধনের সুযোগ তাকে দেওয়া হবে কী ভাবে? পরে আইন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যাবজ্জীবন মানে এ বার থেকে সাধারণ ভাবে যাবজ্জীবনই। তবে ছাড়ের সুযোগ একেবারে উঠে যাচ্ছে না। রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের সম্মতি সাপেক্ষে কিছু ক্ষেত্রে যাবজ্জীবনের আগেই ছাড় মেলার সুযোগ থাকবে। |