পঞ্চায়েত ভোটে ভরাডুবির পরে মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরের তামলিবাঁধ ময়দানে সূর্যকান্ত মিশ্রের সভার ভিড় সিপিএমকে কিছুটা ‘অক্সিজেন’ জুগিয়ে গেল। অন্তত এমনটাই মনে করছেন মনোবল তলানিতে চলে যাওয়া সিপিএম কর্মীরা।
দলের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “কলকাতায় বলে এসেছি, বাঁকুড়ার সভায় ৩০ হাজার লোক হবে। এখানে এসে দেখছি অনেক বেশি হয়েছে।” তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে গত বছর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সভা হয়েছিল এই তামলিবাঁধ ময়দানে। সে বারও এমনই ভিড় দেখা গিয়েছিল। লোকসভা ভোটের আগে এই জনসমাগম দলের নিচুতলার কর্মীদের চাঙ্গা করবে বলে মনে করছেন সিপিএমের জেলা নেতারা। আগামী শুক্রবারই বাঁকুড়া পুরসভার একটি ওয়ার্ডের উপনির্বাচন রয়েছে। তাই ওই নির্বাচনের আগে সুর্যকান্তবাবুর এই সভা বাঁকুড়া শহরের কর্মীদের কাছে টনিকের কাজ করবে বলে মনে করছেন দলের শহর নেতৃত্ব। সূর্যকান্তবাবুর সঙ্গে এই সভায় ছিলেন স্থানীয় সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ দে, জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র প্রমুখ। |
অনেক দিন পরে বাঁকুড়া শহরে সিপিএম বড়মাপের নেতৃত্বকে এনে সভা করল। তাই এই ভিড় নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই শুরু হয়ে গিয়েছে শাসক ও বিরোধী দলের কাজিয়া। সিপিএমের জেলা সম্পাদক বলেন, “সন্ত্রাস চালিয়ে আর মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারবে না তৃণমূল। এই ভিড় তারই প্রমান দিল।” অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা কো-চেয়ারম্যান তথা জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, “বাঁকুড়ার মানুষের সমর্থন হারিয়ে সিপিএম এখন জেলার বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে মাঠ ভরানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাতেও মাঠ ভরল না।” জেলা পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, সভায় আড়াই হাজার লোক এসেছিল।
সূর্যকান্তবাবু অভিযোগ করেন, “শাসক দল বলেছিল পঞ্চায়েত ভোটটা উতরে দিলে বেকারদের সিভিক পুলিশে চাকরি দেওয়া হবে। হাজার হাজার বেকারদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ওঁদের হাতে একটা করে লাঠি ধরিয়ে দিয়ে সিভিক পুলিশ তৈরি করে দিল। তাদের না ছিল কোনও পোশাক, না ছিল কোনও ট্রেনিং। যে লাঠিটাও দেওয়া হয়েছিল সেটাও এখন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ওরা সকলেই কাজ হারালো।” তাঁর আরও বক্তব্য, জেলায় জেলায় হাজার হাজার বেকার এখন জেলাশাসকের অফিসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, ডেপুটেশন দিচ্ছে। ওরাই বলছে, তৃণমূলের লোকেরা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছিল। সূর্যকান্তবাবু রাজ্যের বর্তমান শিল্প-পরিস্থিতি, স্বজির মূল্যবৃদ্ধি থেকে নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। এ দিন জেলা বামফ্রন্টের তরফে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে মূল্য বৃদ্ধি, ঘরছাড়া দলীয় কর্মীদের ফেরানো-সহ সাত দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেয়। |